Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন খায়রুল বাশার আশিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৫৩

ঢাকা: খায়রুল বাশার আশিক গণমাধ্যমে নিয়মিত লেখেন মানবিক ফিচার। প্রান্তিক মানুষের কষ্টসাধ্য জীবনযাত্রা, হাসি-কান্না, সমস্যা কিংবা সম্ভাবনার কথা থাকে তার লিখনিতে। লিখতে ভালোবাসে দেশের অবহেলিত অধিকারহারা শিশুদের কথা। আর এমন সংবাদ গণমাধ্যমে তুলে ধরার কারণেই খায়রুল বাশার আশিককে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দিয়ে সম্মানিত করল ইউনিসেফ।

২০ ডিসেম্বর (সোমবার) বিকেল ৩ টায় ভার্চুয়ালি এক কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানটি ইউনিসেফ বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অবহেলিত উপকূলের মান্তা জনগোষ্ঠীর শিশুদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় এই পুরস্কার জিতলেন তিনি। এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত ওই সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘নৌকায় জন্ম ওদের, নৌকায় বেড়ে ওঠা’।

সাংবাদিক খায়রুল বাশার আশিক জন্ম নিয়েছে উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। বাবা আবুল কালাম আজাদ ও মা সেলিনা পারভীনের তিন সন্তানের মধ্যে তিনিই বড়। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী থাকাকালে পেশা হিসেবে পছন্দ করেন সাংবাদিকতা। মনের মধ্যে সেই স্বপ্নকে পুষে রেখে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই স্বপ্ন দেখেন সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ালেখার। তবে নানা কারণে তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। পরে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স- মাস্টার্স করলেও মনের মধ্যে পুষে রাখেন সাংবাদিকতাকে।

অনার্সে পড়ালেখা অবস্থায় আশিক যোগদান করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিবর্তন ডটকমের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। দুই বছর মফস্বল সাংবাদিকতার পর দৈনিক খোলা কাগজের সহ-সম্পাদক হিসেবে ঢাকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। তার এক বছর পরেই মাঠ সাংবাদিকতার নেশায় ডেস্ক ছেড়ে তিনি আবার চলে যায় প্রান্তিকে। আবার শুরু হয় প্রান্তিক মানুষের গল্পগুলো সংবাদ মাধ্যমে তুলে আনার কাজ। তখন মুক্ত সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত হন রাইজিং বিডিতে। পাশাপাশি গ্রামীণ শিশু, নারী, জেলে ও উপকূলীয় নানা সমস্যা ও সম্ভাবনাসহ ভ্রমণ ফিচার লিখতে থাকেন জাগো নিউজ, এনটিভিসহ প্রথম সারির কিছু গণমাধ্যমে। ২০২১ সালের শুরুর দিকে তিনি এনটিভি অনলাইনে ঢাকা অফিসে যোগ দেন। সদ্য তিনি সাব-এডিটর হিসেবে যোগ দিয়েছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি বাংলাদেশে।

বিজ্ঞাপন

পুরস্কার প্রাপ্তির পর অনুভূতি ব্যক্ত করে আশিক বলেন, ‘যে কোনো পুরস্কার কাজে উৎসাহ যোগায়। আমার কাছে এই পুরস্কার অনেক বড় একটি প্রাপ্তি। এই পুরস্কার নিশ্চয়ই আমার কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দেবে। এই পুরস্কার আগামীতে আরও ভালো প্রতিবেদন লেখায় অনুপ্রেরণা জোগাবে। আমার এই ছোট সাংবাদিকতা জীবনে যাদের অবদান রয়েছে, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য এ বছর পুরস্কারের জন্য জমা পড়েছে প্রায় এক হাজারের বেশি আবেদন। সেখান থেকে প্রতিটি বিভাগে মনোনীত পাঁচজনের মধ্যে সেরা তিনজন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে ইউনিসেফ।

শিশুদের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার উৎকর্ষতাকে স্বীকৃতি দিয়ে ২০০৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস। ২০২১ সালে এই অ্যাওয়ার্ডসের ১৬তম পর্ব অনুষ্ঠিত হল। যার লক্ষ্য সাংবাদিকতামূলক প্রতিবেদন প্রচারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী এবং বৃহত্তর জনসাধারণের কাছ থেকে শিশুদের জন্য সমর্থন আদায় করা। শিশু বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য ইউনিসেফ মীনা অ্যাওয়ার্ড বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড বলে খ্যাত।

শিশু অধিকারের বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে সাংবাদিকতায় এমন প্রতিবেদনের জন্য টেক্সট, ফটোগ্রাফি ও ভিডিও ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয় ইউনিসেফ। ১৮ বছরের নিচে ও তদূর্ধ্ব এই দুইভাগে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। এ ছাড়াও শিশুদের ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব, শিশুদের জন্য সরকারি বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু, বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, জলবায়ু পরিবর্তন ও শিশু বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় বিশেষভাবে অ্যাওয়ার্ডস দিল ইউনিসেফ।

এই পুরস্কারের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হয়েছিল ২৩ আগস্ট ২০২১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত।

এবারের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসে বিচারক হিসেবে ছিলেন, টেক্সটভিত্তিক প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার বিজয়ী ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন, বর্ষীয়ান সাংবাদিক ও শিক্ষক শাহনুর ওয়াহিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন। ফটোগ্রাফির জন্য রয়টার্সের ভিডিও সাংবাদিক রফিকুর রহমান, এক্টিভিস্ট ও পুরস্কার বিজয়ী আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া এবং পুরস্কার বিজয়ী আলোকচিত্রী আবু নাসের। ভিডিওর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস,সম্প্রচার সাংবাদিক মিথিলা ফারজানা এবং রয়টার্সের চিফ করেসপন্ডেন্ট রুমা পল।

সারাবাংলা/একে

খায়রুল বাশার আশিক মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর