হাসন রাজার ১৬৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:৪৮
সুনামগঞ্জ: মরমী সাধক ও আধ্যাত্মিক কবি দেওয়ান হাসন রাজার ১৬৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর)। হাসন রাজার গানে সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী যেমন উচ্চারিত হয়েছিল, তেমনি সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান। তাই তিনি এখনো বেঁচে আছেন দেশের মাটি ও মানুষের মাঝে।
‘মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে কান্দে হাসন রাজার মনমুনিয়া রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম না কইলাম তার কাম- বৃথা কাজে হাসন রাজায় দিন গুজাইলাম’ আবার ‘সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা বানাইলো সোনা বন্ধে আমারে পাগল করিল- আরে না জানি কি মন্ত্র করি জাদু করিল’— হাসন রাজার এমন অনেক গান আজো মানুষে মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। বলা যায় চিরন্তন সংগীতে রূপ পেয়েছে হাসন রাজার এসব গান।
লোভ লালসার বাইরে থেকে সহজ সরল জীবন যাপনে রচনা করে গেছেন অসংখ্য লোকগান। মরমী এই সাধকের জন্ম-মৃত্যুতে বরাবরই খুব একটা আয়োজন থাকে না সুনামগঞ্জে। তবে এবছর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী একসঙ্গে পালন করবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও হাসন রাজা ট্রাস্ট।
১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের লক্ষণশ্রীর ধনাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্ম নেওয়া মরমী সাধক হাসন রাজা জীবদ্দশায় প্রায় ২০০ গান রচনা করেছেন। ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার স্মৃতি ধরে রাখা হাসন রাজা মিউজিয়ামে অনেকেই আসেন দূর-দূরান্ত থেকে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে হিবার্ট বক্তৃতায় হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু প্রখ্যাত এই মরমী সাধকের জীবন-দর্শন ও গানের চর্চা এখন আর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হয় না বললেই চলে। মরমী সাধক হাসনরাজার জীবন দর্শন নিয়ে গবেষণার সুযোগ দেওয়ার দাবি সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
সাংস্কৃতিক কর্মী সোহান রহমান বলেন, হাসন রাজা একজন জমিদার হয়েও সাধারণ জীবনযাপন করে সাধারণ মানুষের জন্য গান লিখেছেন। এখনো হাসন রাজার গান নিয়ে সুনামগঞ্জে তেমন কোনো চর্চা হচ্ছে না। ফলে হাসন রাজা সম্পর্কে বর্তমান যুগে অনেকেই অনেক কথা জানে না।
হাসন রাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদাদ রাজা চৌধুরী বলেন, আমরা জন্ম ও মৃত্য দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, হাসন রাজার ছবি আঁকা প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হাসন রাজাসহ সুনামগঞ্জে নির্মাণ করার জন্য অনেক সাংস্কৃতিক কর্মীরা দাবি তুলেছেন। আমরা সেই দাবিটি সরকারের কাছে তুলে ধরব।
সারাবাংলা/এসএসএ