Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংবর্ধিত হলেন আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৫১

ঢাকা: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেওয়া আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে ইসলামী যুব আন্দোলন।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

বিজ্ঞাপন

সংবর্ধনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গ্রান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজধানী উত্তরার জামিয়াতুস সাহাবা’র প্রিন্সিপাল আল্লামা রুহুল আমিন খান উজানভী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল কাশেম প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দীন।

সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী, মাওলানা শওকত আমীন, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল হাশেম, মাওলানা মুহম্মদ আলী, কারী আব্দুল হামিদ, মাওলানা আলী আহমেদ, মাওলানা আসমত আলী মিয়া, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা আবু তাহের মজুমদার, মাওলানা নিজাম উদ্দীন প্রমুখ।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, ‘ইসলাম এবং স্বাধীনতা- এই দু’টি বিষয় সাংঘর্ষিক নয়। ইসলাম মানুষকে পরাধীন দেখতে চায় না। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাধীনতার সংজ্ঞা এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের দৃষ্টিতে স্বাধীনতার সংজ্ঞা এক নয়। ইসলাম মানুষের বৈষয়কি স্বাধীনতা যেমন চায়, আত্মার স্বাধীনতাও তেমনি চায়।’

বিজ্ঞাপন

‘শয়তান এবং শয়তানিয়াতের নাগপাশ থেকে আত্মা যতক্ষণ মুক্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত একটা মানুষ প্রকৃত স্বাধীন হতে পারবে না। তাই যখনই আমরা স্বাধীনতার কথা উচ্চারণ করব, তখনই আমরা বৈষয়িক স্বাধনীতার সাথে আত্মার স্বাধীনতার কথাও বলব। আমাদের শয়তান ও শয়তানিয়াতের নাগপাশ থেকে বেরিয়ে আসার স্বাধীনতাও আর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ বৈষয়িকভাবে, ভৌগোলিকভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বটে শয়তান এবং শয়তানিয়াতের নাগপাশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের কাজ এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে’- বলেন আল্লাম ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘ভারত স্বাধীন করতে গিয়ে ৮০ হাজার আলেম জীবন দিয়েছিল। ১৪ হাজার আলেমকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। ইন্ডিয়ান গেটের মধ্যে নাম লেখা রয়েছে ৯৩ হাজার ৩৬৩জন শহিদের। এদের মধ্যে ৬২ হাজার ৯৪৫ জন ছিল মুসলমান।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে হিন্দু ছিল ২৮ শতাংশ। কিন্তু সাত জন বীর শ্রেষ্ঠের মধ্যে একজনও অমুসলীম নেই। বীর উত্তম ৬৯ জন; এর মধ্যে একজন অমুসলিম। বীর বিক্রম ১৭৩ জন; এর মধ্যে মাত্র তিন জন অমুসলিম। বীর প্রতীক ৪২৬ জন; এর মধ্যে মাত্র এক জন অমুসলিম। অর্থাৎ ৬৭২ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে অমুসলিম মাত্র ছয় জন।’

‘কাজেই বৃটিশবিরোধী আন্দোলনেও মুসলমান, পাকিস্তানেও মুসলমান, বাংলাদেশ গড়ার পেছনেও মুসলমান। মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্যই বৃটিশরা এ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, মুসলানদের জন্যই পাকিস্তান হয়েছে এবং মুসলমানদের কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এটা মানতে হবে, এটাই ইতিহাস। কিন্তু আমরা কী দেখতে পাই- স্বাধীনতা মানেই ইসলাম থাকবে না, স্বাধীনতা মানেই মসজিদ থাকবে না, টুপি-দাড়ি থাকবে না, স্বাধীনতা মানেই মাদরাসা থাকবে না, কোরআন এবং হাদিসের পড়াশোনা থাকবে না’- বলেন সৈয়দ মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবীনী আমরা পড়েছি, আমরা দেখেছি। তিনি লিখেছেন তার বই’র মধ্যে- আমাদের দুইটা পরিচয়। প্রথম হলো মুসলাম, তারপর বাঙালি। আজকে যারা মুসলমানদের এ দেশ থেকে বিতারিত করতে চাচ্ছেন, তারা শেখ সাহেবকে বিতারিত করবে পারবেন?’

ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমি প্রথমে মুসলিম তারপর আওয়ামী লীগ। আমি প্রথমে মুসলিম তারপর বিএনপি। আমি প্রথমে মুসলিম তারপর জাতীয় পার্টি। আমি প্রথমে মুসলিম তারপর চরমোনাই। অর্থাৎ আমার প্রথম পরিচয় আমি মুসলমান তারপর আমি অন্য কিছু।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

আলেম বীর মুক্তিযোদ্ধা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর