Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপির ২ গ্রুপের সংঘর্ষে প্রতিনিধি সভা পণ্ড, আহত ২৭

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৯:০৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির প্রতিনিধি সভায় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে প্রতিনিধি সভা পণ্ড হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর কোতোয়ালি থানার নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনে উত্তর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রতিনিধি সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম এবং উত্তর জেলার আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। তাদের উপস্থিতিতেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কর্নেল (অব.) আজিমউল্লাহ বাহার এবং ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীরের গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

আজিম উল্লাহ বাহার ফটিকছড়ি আসন থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। ওই আসন থেকে আগে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী। বর্তমানে আজিমউল্লাহ বাহারের বিরোধী সাকা পরিবার এবং তার ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী। সরোয়ার আলমগীর সাকা পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

মঙ্গলবার বিকেলে নাসিমন ভবনের তৃতীয় তলায় উত্তর জেলার কার্যালয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা ও দুই পৌরসভা বিএনপির প্রতিনিধি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। সভা চলাকালে হঠাৎ হাতাহাতি, মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতরে চেয়ার ভাঙচুর এবং সংঘর্ষ শুরু হলে গোলাম আকবর খোন্দকার প্রতিনিধি সভা বন্ধ ঘোষণা করে চলে যান। আজিমউল্লাহ বাহারসহ তার পক্ষের নেতাকর্মীরাও বেরিয়ে যান।

সরোয়ার আলমগীরের অভিযোগ, তার সমর্থক নেতাদের দাওয়াত না দিয়ে আজিমউল্লাহ বাহার এককভাবে প্রতিনিধি সভার আয়োজন করে যেনতেনভাবে একটি উপজেলা কমিটি করে ফেলার পাঁয়তারা করেছিলেন।

সরোয়ার আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজিমউল্লাহ বাহারের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড থেকে নাসিমন ভবনে আসেন। আমি আগে থেকেই সভায় ছিলাম। সবাই মিলে যখন গোলাম আকবর খোন্দকার সাহেবের কাছে আরজি তুলে ধরছিলাম, তখন আজিম সাহেবের দুই ভাই জামায়াত ক্যাডার শওকতউল্লাহ ও এরশাদউল্লাহ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। লাঠিসোঠা, ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে।’

বিএনপি নেতা সরোয়ারের দাবি, হামলায় আহত হয়ে মোহাম্মদ আলম নামে এক নেতা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। আরও চারজন একই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ১৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ফরিদুল আলম ও জাহাঙ্গীর আলম নামে দুই বিএনপি নেতা আহত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

জানতে চাইলে আজিমউল্লাহ বাহার সারাবাংলাকে বলেন, ‘৩০ জন তৃণমূলের নেতার উপস্থিতিতে প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেছিলাম। সেখানে তার (সরোয়ার আলমগীর) লোকজনকেও দাওয়াত করা হয়েছিল। কিন্তু গিয়াসউদ্দিন কাদেরের ইন্ধনে সে প্রতিনিধি সভা পণ্ড করার পরিকল্পনা করে। তার গার্মেন্টের শ্রমিকদের এনে নাসিমন ভবনের নিচে দাঁড় করিয়ে রাখে, যাওয়ার সময় ঝামেলা সৃষ্টি হয়। শুরু থেকেই তারা বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি গালিগালাজও করতে থাকে। সভা শুরুর পর তারা তিন তলায় উঠে হামলা করে। সেখানে দরজা, লোহার গ্রিল ভাঙচুর করেছে। এ অবস্থায় সভা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।’

আজিমউল্লাহ বাহারের দাবি, হামলায় তার অনুসারী অন্তত পাঁচ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে প্রতিনিধি সভাকে ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্কায় মঙ্গলবার দুপুর থেকেই নাসিমন ভবনের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। তবে সংঘর্ষের সময় পুলিশকে কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাইরে পুলিশ ছিল। মারামারি ভেতরে হয়েছে। যেহেতু রাস্তায় কিছু হয়নি, পুলিশও ভেতরে যায়নি। মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সারাবাংলা/আরডি/একেএম

বিএনপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর