Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৯ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে আয়েশা’স মেকওভার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৫৯

ঢাকা: আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা’র ওয়ারী ও বনানী শাখায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৯ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ ঘটনায় মামলাও করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। এই দুই শাখার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বনানী শাখার বিপরীতে ভ্যাট নিবন্ধনই নেওয়া হয়নি।

ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওয়ারী ও বনানীর শাখায় আয়েশা’স বিউটি পার্লারে অভিযান চালিয়ে এই ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করে আজ (মঙ্গলবার) প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর জানিয়েছে, একজন গ্রাহকের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে এই অভিযান চালানো হয়। ওই গ্রাহক আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা থেকে সেবা নিলে তাকে কাঁচা চালানে বিল দেওয়া হয়। পরে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরে অভিযোগ দেন।

ড. মইনুল খান জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলপত্র উপস্থাপন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর এবং ভ্যাট সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে ভ্যাট গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানটিতে তল্লাশি চালান। এরপর সেখানে পাওয়া ভ্যাট ও বাণিজ্যিক দলিলপত্র যাচাইয়ে গরমিল এবং ভ্যাট ফাঁকির আলামত পাওয়া যায়। পরে তাদের ভ্যাট সংক্রান্ত বাণিজ্যিক দলিলপত্র জব্দ করা হয়।

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আয়েশা’স বিউটি পার্লারের ওয়ারী শাখায় ২০২০ সালের জুলাই থেকে এ বছরের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ টাকার সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় সূত্রাপুর ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নের মাধ্যমে মাত্র ৪৩ হাজার টাকা ভ্যাট জমা দেয়। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১১ লাখ ১০ হাজার ২৯০ টাকার। ভ্যাট আইন অনুযায়ী এর ওপর মাসে ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩২ টাকা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, একই প্রতিষ্ঠানের বনানী শাখায় ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে এ বছরের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪০ টাকার সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় গুলশান ভ্যাট সার্কেলে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই শাখায় প্রতিষ্ঠানটি ৪ লাখ ১০ হাজার ৫৮৮ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট আইন অনুযায়ী এর ওপর মাসে ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য ৭৮ হাজার ৫৩৩ টাকা।

এছাড়া, বনানী শাখাতেই ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে এ বছরের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে স্থান-স্থাপনা বাবদ ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার বিপরীতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এর ওপর মাসে ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয়েছে ১২ হাজার ১৯৬ টাকা।

সব মিলিয়ে ১৩ মাসে আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা মোট ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯২১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এর ওপর প্রযোজ্য সুদ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৬১ টাকা। সুদসহ প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরকারের পাওনা ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮২ টাকা।

ড. মইনুল বলেন, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ায় মঙ্গলবার আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার বিরুদ্ধে আলাদা দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়ারী শাখা থেকে ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট আদায়ে মামলার প্রতিবেদন ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে। আর ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করায় এবং ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ায় বনানী শাখার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/এসজে/টিআর

আয়েশা’স মেকওভার আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা ভ্যাট গোয়েন্দা ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ভ্যাট ফাঁকি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর