মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করবে বাংলাদেশ বিমান: প্রধানমন্ত্রী

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে সংযোগ জোরদারে সম্মত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারতের চেন্নাই হয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এ তথ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট বাড়নো হয়েছে। এবার আমাদের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স চেন্নাই হয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, ফ্লাইট চালুর ফলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও পর্যটন সহযোগিতা আদান-প্রদান বাড়বে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আরও পড়ুন- মালদ্বীপকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগ উন্নয়ন নিয়ে প্রেসিডেন্ট সলিহের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সংলাপের সময় বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া, মৎস্য ও কৃষি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনেও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে যোগ্য স্বাস্থ্য পেশাজীবী নিয়োগের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, দ্বৈত কর এড়ানো এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে কর ও আয় সংক্রান্ত বিষয়ে চুক্তি এবং চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে দুই দেশের আগের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে এ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করে সন্তোষজনক ফলাফল মিলেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন- ‘মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ’

তিনি বলেন, উভয় দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে— এমন অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা, একে অন্যের প্রার্থীদের সমর্থন এবং সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার দেশের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশসহ অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অনুমতি দেবে না— এ কথাও বলেন তিনি।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করতে সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেন। প্রেসিডেন্ট সালিহ বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তিনি কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসার উদ্যোগ কামনা করেন। মালদ্বীপের শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশকে একটি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট সলিহ প্রধানমন্ত্রীকে এসব শিক্ষার্থীদের পূর্ণ মেয়াদে ভিসা দেওয়ারও আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন- বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই

আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম বাংলাদেশ পক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

মালদ্বীপের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, অর্থমন্ত্রী ইবরাহিম আমির, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী আসিয়া নাসির, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী উজ ফাইয়াজ ইসমাইল এবং পরিবেশ ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী সোরিক ইবরাহিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপ সফর বাংলাদেশ-মালদ্বীপ বাংলাদেশ-মালদ্বীপ ফ্লাইট