‘বাজারে পণ্যের দাম বাড়লেও বিবিএসের তথ্যে প্রতিফলন নেই’
২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:২৪
ঢাকা: বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেও সরকারি সংস্থা বিবিএসের তথ্যে দাম বাড়ার কোনো প্রতিফলন নেই। এটা হতে পারে, বিবিএস যেসব পণ্যের ওপর ভিত্তি করে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) করে থাকে, সেটি অনেক পুরোনো। অথচ সাম্প্রতিক মানুষের ভোগে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তাই ভোক্তা মূল্যসূচক করার জন্য নতুন পণ্যের বাস্কেট করতে হবে। কারণ, বাজারে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের সঙ্গে বিবিএসের তথ্যে যথেষ্ট ফারাক দেখা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সিপিডির নিজস্ব কার্যালয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে স্বাধীন পর্যালোচনার আওতায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২১-২২, প্রথম অন্তবর্তীকালীন পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তব্য দেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনা মহামারির কারণে দেশের বেশিরভাগ মানুষের আয় কমে গেছে, কর্মসংস্থানও নেই অনেকের। মানুষ আর্থিক চাপে আছে, তাই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে। বিষয়টিকে খুবই উদ্বেগজনক মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এতে বলা হয়, দেশে চাল উৎপাদনে রেকর্ড হচ্ছে। বিদেশ থেকে চাল আমদানিও হচ্ছে। তবু কেন নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না, বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৪ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বাস্তবতার সঙ্গে যার বিরাট ফারাক। আমরা মনে করি অতিমারির সময়ে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এছাড়া ঋণের ক্ষেত্রেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো অসংখ্য মানুষ করোনার কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে। তাদের নগদ টাকা দিতে হবে। প্রতি পরিবারে চারজন সদস্য ধরে এক মাসে খরচ আসে ৭ হাজার ২৯৭ টাকা। যদিও সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে আড়াই হাজার টাকা করে। নগদ টাকা আরও বেশি সময় ধরে দেওয়া উচিত।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই প্রণোদনা হিসেবে নগদ টাকা দিয়েছে। সিপিডির পক্ষ থেকেও প্রান্তিক মানুষকে নগদ আট হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ পরিবার বাছাই করা হলেও সবাইকে নগদ টাকা দেওয়া যায়নি। সুবিধাভোগীর তালিকা বাছাই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।’
চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেটে সারের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে রাখা হয়েছে। কিন্তু এখন যেভাবে দাম বেড়েছে, তাতে ২২ হাজার থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকার মতো প্রয়োজন হবে। আবার গ্যাসের দামও বাড়ছে। যেভাবে রাজস্ব আহরণ হচ্ছে, তা দিয়ে মূল্য সমন্বয় করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম