আমের নতুন জাত বারি-১৮, ‘মিষ্টি বেশি, দারুণ ঘ্রাণও’
২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:২০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম মৌসুমই শুরু হয় গোপালভোগ আম দিয়ে। জনপ্রিয় হলেও আক্ষেপের বিষয় গোপালভোগ আমটি বাজারে বেশি দিন পাওয়া যায় না। কারণ এই আমের ফলন কম হওয়ার বাজারে আগেই ফুরিয়ে যায়— বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীনকে। সেই ভাবনা থেকেই দীর্ঘ গবেষণায় মিলেছে সুখবর।
গোপালভোগের সঙ্গে ‘বারি আম-১’ এর শংকরায়ন করে নতুন হাইব্রিড ‘বারি আম-১৮’ উদ্ভাবন করেছেন এই বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই নতুন হাইব্রিড এই জাত ‘বারি আম-১৮’ নামে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ডের নিবন্ধন প্রত্যয়নপত্র পেয়েছে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্রও চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে।
বারি- ১৮ আমের বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গিয়ে ড. জমির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের ল্যাংড়া আম ছাড়া অন্য কোন আমে তেমন সুঘ্রাণ পাওয়া যায় না। নতুন এ জাতটিতে মিলেছে ল্যাংড়া আমের মতই সুঘ্রাণ। এছাড়াও আমটির ফলন বেশি, গড় ওজনও প্রায় ২৪০ গ্রাম। এর ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৫ ভাগ।’
মিষ্টতার দিক থেকেও অনেক এগিয়ে নতুন এ জাতটি, এ জাতের মিষ্টতার পরিমান শতকরা ২৪.৬৭ ভাগ বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
নতুন আমের এ জাতটির মধ্য জুন থেকে পাকা শুরু করে জুনের শেষ পর্যন্ত গাছে থাকে। যারা গোপালভোগ আমের মতো আম খাওয়ার কথা ভাবেন তাদের জন্যই এ জাতটি। অন্যদিকে গোপালভোগ আমের গাছে ফলন কম হওয়ার কারণে কৃষকরাও গাছটির প্রতি আগ্রহ হারান, সেদিক বিবেচনায় নতুন জাতটির যেহেতু ফলন বেশি হয়, সেহেতু এটি চাষে সবাই আগ্রহী হবেন।
এখন পর্যন্ত বারি থেকে মুক্তায়িত ১৮টি আমের জাতের মধ্যে ১৪টি জাতটি মুক্তায়ন করা হয়েছে চাঁপাইানবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে। এরমধ্যে চারটি হাইব্রিড জাতের উদ্ভাবকই চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেসুর রহমান বলেন, ‘বারি আম- ১৮ নামে নতুন হাইব্রিড আমের জাতটি চূড়ান্ত ভাবে নিবন্ধন পাওয়ার পর, জাতটি সম্প্রসারনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে দ্রুতই। আমাদের কেন্দ্র থেকে চারা কলম তৈরি করে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে।’
সারাবাংলা/এমও