খালেদাকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা— কাদের বললেন ‘আষাঢ়ে গল্প’
২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:২৯
ঢাকা: খালেদা জিয়াকে ‘নারী মুক্তিযোদ্ধা’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলছেন, মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্পে’র মতো।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন বক্তব্য রাখার মাধ্যমে বিএনপির চিরাচরিত মিথ্যাচারের অপরাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন কাদের।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্পে’র মতো। খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গণে অংশ নেওয়া বীর নারীদের গৌরবগাঁথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপি’র শক্তির একমাত্র উৎস। আমরা আশা করি, বিএনপি নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত— মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহিমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপি জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানেন, এই অর্থপাচারের মূল হোতা কারা এবং হাওয়া ভবন তৈরি করে কারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও অর্থপাচারকারীদের দল বিএনপি নেতাদের মুখে অর্থপাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়!
তিনি বলেন, বিএনপি’র শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একইসঙ্গে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ কেলেঙ্কারির কথা সবাই জানে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র কোকো রহমানের পাচার করা অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি নেতারা মুখে একদিকে অর্থপাচারের কথা বলেন, অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পালতক খুনি আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবনযাপনের রসদ পাঠান। এ দেশের জনগণ জানে— বিএনপি’র সাজাপ্রাপ্ত নেতা, একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগে এবং বিএনপি’র মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে কারা পাচার করছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রযাত্রার পথে থাকা বাংলাদেশের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থসামাজিক সব সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই বিনিয়োগ বাড়ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভয়াবহ অভিঘাতের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির গতি সচল রয়েছে।
বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই বিএনপি নেতাদের চোখে পড়ে না। আমরা বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাব— অসংলগ্ন কথাবার্তা পরিহার করুন এবং সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস নিয়ে গঠনমূলক বক্তব্য দিন,’— বিবৃতিতে বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর