সুগন্ধায় লঞ্চে আগুনের ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ২৬ যাত্রী
২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:২৪
ঝালকাঠি: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ২৬ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনভর নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে অভিযান চললেও নতুন মরদেহের সন্ধান মেলেনি।
আগুনের ঘটনায় সর্বশেষ ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এ নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার ঝালকাঠি সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকার গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে লঞ্চটির স্টিলের কাঠামো ছাড়া সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শনিবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য দিনভর সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে অভিযান চালায়। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা কোনো মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি। এসময় নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরাও ট্রলার নিয়ে নদীতে স্বজনদের খুঁজে বেড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন:
লঞ্চে আগুন: দগ্ধ আরও এক জনের মৃত্যু
লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে ৩০ জনকে দাফন
আগুন লাগার পরও নদীতে এক ঘণ্টা চলেছিল লঞ্চটি
লঞ্চের আগুনে দগ্ধ স্বজনদের দেখতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ জনের
লঞ্চে আগুন: ৪০ জনের মরদেহ হস্তান্তর, ৪ জনের পরিচয় শনাক্ত
শেবাচিম হাসপাতালে বন্ধ বার্ন ইউনিট, দগ্ধদের চিকিৎসা সার্জারিতে
‘বউ আর ৩টা বাচ্চা বেঁচে আছে না মরে গেছে, তাও বলতে পারছি না’
লঞ্চে আগুন: নানীর মৃত্যুর খবরে বাড়িতে, ফেরার পথে হারালেন মেয়েকে
শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তোফায়েল আহমেদ, কমিটির অপর সদস্য ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল উদ্দীন ভুইয়া, বরিশাল নৌ পুলিশ সুপার কফিল উদ্দীন, ঝালকাঠি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আলম, নৌ-পরিবহন (ইঞ্জিনিয়ার) তাইফুর আহমেদ ভুইয়া, মংলা নৌ চলাচল বন্দরের মামুন অর রশিদ ও বিআইডব্লিউটি প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শন করেন।
নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চে বিআইডব্লিউটি-এ যে সংখ্যক যাত্রীর কথা বলেছে, তারও চেয়ে লঞ্চে যাত্রী অনেক বেশি ছিল।’
সকাল ১১টায় সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শন করেন। এসময় সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, ‘এ ঘটনায় পৃথক ৩টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নিখোঁজদের উদ্ধারে নেতৃত্ব দেওয়া বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক মো. বেলাল উদ্দীন জানান, নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সুগন্ধা ও বিশখালী নদীতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানান, এখন পর্যন্ত ২৬ জনের নিখোঁজের তালিকা পাওয়া গেছে।
এদিকে, শুক্রবার রাতে বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমনের উপস্থিতিতে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন ৩৩টি মরদেহ হস্তান্তর করেন এবং এর আগে শনাক্ত হওয়া ৫টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সারাবাংলা/এমও