ঢাকা: রাজধানীর গণপরিবহনে শৃংখলা ফেরাতে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) থেকে চালু হচ্ছে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’। বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের প্রথম ধাপে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমটার পথে চলবে বাস। বেলা ১১টায় সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত এই ২১ কিলোমিটার পথে ৫০টি সবুজ রঙের বাস নিয়ে ঢাকা নগর পরিবহন বাস রুট পাইলটিং এর কার্যক্রম শুরু হবে। ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, ২৬ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা নগর পরিবহন যাত্রা শুরু করবে। এই পরিবহন সেবায় যুক্ত হতে আটটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এরমধ্যে বিআরটিসিসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেওয়া হয়। এই পাঁচ কোম্পানির ৫০টি বাস শুরুতে সার্ভিস শুরু করবে। পরের দুই মাসের মধ্যে এই রুটে মোট ১০০ বাস চলাচল করবে বলেও জানিয়েছিলেন দক্ষিণের মেয়র।
জানা গেছে, এ রুটে চালু হতে যাওয়া বাসগুলোতে প্রথম দিন থেকে ই- টিকিটিং সিস্টেম চালু করা হবে। প্রস্তত করা হয়েছে নতুন যাত্রী ছাউনি। সবুজ রঙের বাসগুলোর চালক ও হেল্পারদের থাকবে নির্দিষ্ট পোশাক আর গলায় ঝোলানো হবে আইডি কার্ড।
রাজধানীর গণপরিবহনে বিশৃংখলা দূর করার এই উদ্যোগ ছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের। বাস রুট রেশনালাইজেশন বা কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নেওয়া পদক্ষেপ বিবেচনায় নিয়ে তখন বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই কমিটি দীর্ঘ পর্যালোচনা করে বর্তমানে রাজধানীতে আড়াই হাজার কোম্পানির পরিবর্তে ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে বাস চলাচল করার সুপারিশ করে। আর রাজধানীতে চলতে থাকা নিবন্ধিত ৩০ হাজার ২৭৪ বাসের পরিবর্তে ৯ হাজার ২৭টি বাস পরিচালনার সুপারিশ করা হয়। এই ৯ হাজারের মধ্যে আবার ৬ হাজার ৪৫৭টি বাস পুরনো থেকে আর নতুন ২ হাজার ৭৬১টি নতুন নামানোর সুপারিশ করা হয়। সঠিকভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিটি কোম্পানিতে ৫০০টির কম বাস রাখা হবে। কোম্পানিগুলোকে আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়।
এরপর বর্তমানের ২৯১ বাস রুট কমিয়ে রেশনালাইজেশন কমিটি ৪২ রুটে আনার সুপারিশ করে। এই রুটগুলোকে তিন ভাগে আরবান, সাব-আরবান এবং ঢাকা চাকা ক্লাস্টার ভাগ করে ৪২ রুটে ৬ রঙের বাস চলাচলের সুপারিশ করা হয়। সে সুপারিশই বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে।