‘২০২১ সালে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে ১২ শ্রমিকের মৃত্যু’
২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে ২০১৫ সাল থেকে গত ছয় বছরে দুর্ঘটনায় ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই শতাধিক বেশি শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে তথ্য দিয়েছে জাহাজ-ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম। সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি ২০২১ সালে শিপ ব্রেকিং খাতে দুর্ঘটনায় অন্তত ১২ জন শ্রমিক নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে যমুনা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে আগুনে চার জন আহতের ঘটনার প্রতিবাদে এ সমাবেশে আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘শিপ ব্রেকিং কারখানার মালিকেরা ব্যবসা ও মুনাফা বোঝেন। কিন্তু শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা বোঝেন না। রাষ্ট্র ও মালিকদের এমন নির্লিপ্ততা আর মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত জাহাজ-ভাঙা ইয়ার্ডে যদি আর একজন শ্রমিকও আহত বা নিহত হন, তা দেশের শ্রমিক শ্রেণি মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন- পরিত্যক্ত জাহাজ কাটার সময় আগুন, আহত ৪
শিপ ব্রেকিং সেক্টরে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে তারা বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জাহাজ কাটার আগে বর্জ্য, বিষাক্ত গ্যাস ও বিস্ফোরকমুক্ত করার বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু সেটি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয় না। বড় জাহাজ কাটার জন্য যে ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা প্রয়োজন, অধিকাংশ ইয়ার্ডে তা ব্যবহার করা হয় না। ফলে প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকেরা কাজ করছেন। জাহাজ-ভাঙা শ্রমিকদের কর্মস্থান আজ কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।’
জাহাজ-ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের কোষাধ্যক্ষ রিজওয়ানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক নেতা ফজলুল কবির মিনটুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক তপন দত্ত, বিলস-এর সিনিয়র কর্মকর্তা পাহাড়ি ভট্টাচার্য, বিএফটিইউসি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক কে এম শহিদুল্লাহ, জাহাজ ভাঙা শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ ইদ্রিছ, কেন্দ্রীয় পরিবহন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস, হাসিবুর রহমান বিপ্লব, মো. পারভেজ।
সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর