রাঙ্গামাটির ১০ ইউপিতে সহিংসতাহীন ‘ভোট উৎসব’
২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ১৯:১০
রাঙ্গামাটি: চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা, পরস্পরবিরোধী অভিযোগ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই রাঙ্গামাটির দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। চতুর্থ ধাপের এই নির্বাচনে রাঙ্গামাটি সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার সবটি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়নি।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় এই দুই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে ভোট শুরুর আগে থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেছে। পরে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হয়।
রাঙ্গামাটি সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। তারা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটকক্ষে ঢুকে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে পুরুষ ভোটারদের চেয়েও নারী ভোটাদের উপস্থিতি বেশি ছিল প্রায় সবক’টি কেন্দ্রেই।
এদিন সকালে জেলা সদরের বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের চোংড়াছড়ি ও করল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রের ভোটাররা জানিয়েছেন, তারা নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পেরেছেন। জনসমাগম এড়াতে ভোটাররা ভোটগ্রহণ শুরুর আগে থেকেই ভোটকেন্দ্রে অবস্থান নেন।
করল্যাছড়ি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ত্রিতোষ চাকমা জানান, ভোটারদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনি পরিস্থিতিও বেশ ভালো ও উৎসবমুখর।
এদিকে, একই ইউনিয়নের মুবাছড়িকেন্দ্রেও সকাল ১১টায় ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। আবার খারিক্ষ্যং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে ভোটারদের দীর্ঘসারি। এর মধ্যেও নারী ভোটাররাই ছিলেন বেশি। দুপুরের দিকেই এ কেন্দ্রে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ভোটগ্রহণের কথা জানান কেন্দ্রটিতে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার।
অন্যদিকে, সদর উপজেলার অন্য পাঁচটি ইউনিয়ন জীবতলী, মগবান, সাপছড়ি, বালুখালী, কুতুকছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নানিয়ারচর সদর ইউপি, সাবেক্ষ্যং, বুড়িঘাট ও ঘিলাছড়িতেও কোনো ধরনের গোলোযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের খবর পাওয়া গেছে।
জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য দুই উপজেলায় মোট ছয় প্লাটুন বিজিবি, পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার মোতায়ন ছিল। পাশাপশি মাঠে ছিল র্যাব ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এছাড়াও প্রতি ইউনিয়নে একজন করে মোট ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন। সবার প্রচেষ্টায় সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৯০টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৭ হাজার ৪৮ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৮, সাধারণ সদস্য পদে ২১১ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো দল অংশ নেয়নি।
সারাবাংলা/টিআর