প্রকৌশলীর ‘বেঈমানি’তে খোলা আকাশের নিচে এক পরিবার
২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৩১
বগুড়া: শেরপুরের শালফা গ্রামে ৫৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে সরকারি জায়গায় বাড়ি করার জন্য মাটি ভরাট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী মো. শাহাজালালের বিরুদ্ধে। তবে উচ্ছেদ অভিযানে সেই বাড়ি ভেঙে ফেলায় পরিবারের ৮ সদস্য, গরু, ভেড়া ও হাস মুরগী নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে ভুক্তভোগি নুর ইসলাম।
এই ঘটনা সাংবাদিকদের বলায় ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছেন ওই প্রকৌশলী।
জানা যায়, উপজেলার খনপুর ইউনিয়নের শালফা গ্রামের মোহাম্মাদ আলীর ছেলে নুর ইসলাম দীর্ঘদিন আগে বাড়ি করার জন্য শেরপুর-ধুনট সড়কের পাশের এক টুকরো জায়গা অন্য একজনের কাছ থেকে কিনে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই সড়ক প্রশস্তের কাজ শুরু হওয়ায় তাদের বাড়ি সড়কের জায়গায় পড়ে। তারা বাড়ি অন্যত্র সরাতে চাইলে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী মো. শাহ জালাল সড়কের নিচ থেকে মাটি কেটে দিয়ে সেখানেই বাড়ি করে থাকার জন্য বলেন। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে ৫৬ হাজার টাকা নেন।
কিন্তু গত ১৪ ডিসেম্বর সড়কের দু’পাশ থেকে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকালে নুর ইসলামের বাড়িও ভেঙে দেয় সড়ক বিভাগ। এতে এই কনকনে শীতে নুর ইসলাম তার বাবা, মা, ভাই, ভাবি, ছেলে, মেয়ে, ভাতিজা, ভাতিজীসহ অন্য গৃহপালিত পশু নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভুক্তভোগি নুর ইসলাম বলেন, ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী শাহজালাল ৫৬ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি করার জন্য মাটি কেটে দিয়েছে। গরু বিক্রি করে আমি তাকে টাকা দিয়েছি। এখন আবার তারাই আমার বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। যদি আমার বাড়ি ভেঙেই দেবে তাহলে এতোগুলো টাকা নিলো কেন? এখন পরিবারের লোকজন ও এতোগুলো গরু নিয়ে আমি কোথায় যাব।’ টাকা নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে বলার জন্য ওই প্রকৌশলী মামলার হুমকি দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহজালাল বলেন, ‘আমি রাস্তার জায়গায় মাটি কেটেছি। তবে বাড়ি করার জন্য কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি।’
মোজাহার এন্টার প্রাইজের প্রজেক্ট ম্যনেজার মো. এমদাদুল বলেন, ‘সরকারি জায়গায় বাড়ি করে দেওয়ার জন্য যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে সেটি অন্যায় করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও