শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই চলছে ভবন নির্মাণ কাজ
২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৯:১৯
ঢাকা: বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে চলছে ভবন নির্মাণ কাজ। গত ২২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির পুরাতন খেলার মাঠে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবির বরাবর ৭ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপিও প্রদান করে তারা । অথচ এসবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খেলার মাঠেই ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ভবনের পেছেনে পুরাতন খেলার মাঠে নতুন আরও একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর। গত নভেম্বরের শেষ দিকে ভবনটির নির্মাণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষভাবে শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, খেলার মাঠের ঠিক মাঝখানে ইট, বালু, সিমেন্ট ইত্যাদি ফেলে রাখে প্রায় অর্ধশতাধিক খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে। মালামাল ও শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি টিনের চালা। প্রতিনিয়ত মাল বোঝাই ট্রাক দিয়ে আনা হচ্ছে বিভিন্ন নির্মাণ সরঞ্জামাদি। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে পিলার তৈরির কাজ। প্রায় ১২ কোটি টাকা মূল্যের ৫ তলা বিশিষ্ট এই ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি পেয়েছে আরএফএল (RFL) প্লাস্টিকস লিমিটেড।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদ অর্ক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খেলার মাঠ ও প্রকৃতি ধ্বংস করে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই এই জায়গায় ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়কে বস্তি বানানোর যে নীল নকশা চলছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ভবনের কাজ শুরুর আগে গত ২২ নভেম্বর আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। কিন্তু প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মনের কথা বুঝতে সমর্থ হয়নি। তারা তাদের মতো সেখানেই ভবন নির্মাণ করছে। আমরা এই কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও মাঠে নামবে। তবুও বিশ্ববিদ্যালয়কে বস্তি হতে দেওয়া যাবে না।’
ভবন নির্মাণের কাজ অন্যত্র সরানোর সুযোগ রয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিয়া অনেক ছোট, অল্প জায়গাতেই অনেকগুলো ভবন করতে হবে। তাই অন্যত্র সরাতে গেলে হয়ত কাজটিই হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাই এখানেই মানসম্মতভাবে, ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট না করে কিভাবে ভবনটি নির্মাণ করা যায় সে বিষয়ে আমরা পরিকল্পনা করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান জানান, এখন শুধুমাত্র পিলার তৈরির কাজ চলছে, পাইলিংয়ের কাজ শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। ভবন নির্মাণের বিষয়টি অন্যত্র স্থানান্তরের সুযোগ রয়েছে। পরবর্তী মিটিংয়ে আমরা এটি উত্থাপন করব।’
সারাবাংলা/একে