Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরামর্শক ব্যয় বাড়ছে মোবাইল গেম-অ্যাপস দক্ষতা উন্নয়নে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪৫

ঢাকা: পরামর্শক ব্যয় বাড়ছে মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন দক্ষতা উন্নয়নে। দ্বিতীয় সংশোধনী প্রকল্পে ৯ জনের জন্য এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এখন ৪ জন পরামর্শকের জন্যই ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে আগের তুলনায় পরামর্শক খাতে ব্যয় বাড়ছে ৭৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তবে সার্বিকভাবেও ব্যয় এবং মেয়াদ বাড়ছে এই সংশোধনীতে।

চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ১৭৫ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৬২.১২ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ। এসব কারণে মোবাইল গেইম ও এ্যাপ্লিকেশন এর দক্ষতা উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধীত) শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৮১ কোটি ৮০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০১৮ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ১৪ জুন একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। এরপর প্রকল্পের ব্যয় ছাড়া বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব তথ্যও যোগাযোগ বিভাগ ২০১৮ সালের ৪ জুলাইয়ে অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে আইএমইডির সুপারিশের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয় এবং প্রকল্পটির মোট ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে কিছু নতুন কম্পোনেন্ট সংযোজন করে পরিকল্পনামন্ত্রী ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

বর্তমানে বাস্তব চাহিদার জন্য নতুন কিছু কার্যক্রম সংযোজন ও চলমান অনুমোদিত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করার জন্য মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০২৩ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য তৃতীয় সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরামর্শক ব্যয় প্রসঙ্গে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আর্থ-সামাজিক অবকাঠমো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার তেমন কিছু মনে নেই। আমরা তো হাজারটা প্রকল্প নিয়ে কাজ করি। তবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় বিষয়গুলো যাচাইবাছাই করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক তরুণকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপস ও গেইম উন্নয়ন বিষয়ে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের মত ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে রাষ্ট্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর মোবাইল গেম অ্যাপস প্রযুক্তি নিয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি ২০১৬ সালে নেয়া হয়েছিল। বর্তমানে বাস্তব প্রয়োজনে নতুন কিছু কার্যক্রম সংযোজন ও চলমান অনুমোদিত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুভিাগ) ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না।’

তবে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মোবাইল অ্যাপস ও গেম নির্মাণ প্রযুক্তি বিশ্বে একটি অন্যতম শিল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভবিষ্যৎ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মোবাইল গেইম ও অ্যাপস নির্মাণ হয়ে উঠবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। বিশেষত বাংলাদেশের মত একটি ক্ষুদ্র জনবহুল দেশে যেখানে ভারী শিল্প নির্মাণের কাঁচামালের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে সেখানে শ্রম, মেধা, সৃজনশীলতা-নির্ভর মোবাইল গেম ও অ্যাপস নির্মাণ শিল্প অনেক বেশি উপযোগি। এদেশে শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠীর বিরাট অংশ বেকার। তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ শিল্পে যুক্ত করতে পারলে দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে তারা একদিকে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

নতুন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্তকরণ প্রকল্পের আওতায় ৭টি নতুন কার্যক্রম, বঙ্গবন্ধু শৈশব নিয়ে ১০ পর্বের এ্যানিমেটেড মুভি ‘খোকা’ নির্মাণ করা, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিশু কিশোরদের সংযোগ স্থাপনের জন্য গেমস ভিত্তিক ওয়েভ প্ল্যাটফর্মের আওতায় ১২টি গেম নির্মাণ করা, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ভার্চুয়াল ট্যুরের ব্যবস্থা নেওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জন্য এ্যানিমেশন ল্যাব স্থাপনের প্রস্তাব সংযোজনসহ আরও কয়েকটি বিষয় প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে।

চলমান কার্যক্রমের বাস্তবায়ন সম্পন্ন করা ও বাস্তবায়ন শেষে একবছর মেইনটেনেন্সসহ প্রস্তাবিত নতুন অঙ্গগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ২৭ হাজার ৪২৫ জনের প্রশিক্ষণ, ২৮৯টি মোবাইল অ্যাপস ও গেম ডেভেলপমেন্ট, ৩৩টি জেলা পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপস টেস্টিং সেন্টার স্থাপন, ৮টি বিভাগীয় পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপস ও গেম টেস্টিং সেন্টার, ৯টি মোবাইল অ্যাপস ও গেম ডেভেলপমেন্ট মার্কেটিং অ্যান্ড প্রমোশন, ৪ জন পরামর্শক সেবা ক্রয় এবং প্রাইস কন্টিজেন্সি।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

গেম-অ্যাপস পরামর্শক ব্যয়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছেই
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০০

সম্পর্কিত খবর