Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় ১০ কোটি মানুষ: পিআরআই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:০৬

ঢাকা: বর্তমানে ১০ কোটির বেশি মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে ১৬টি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান। তবে সেবা সহজতর না হওয়ায় বিপুল সম্ভাবনা থাকার পরও খাতটি এগোচ্ছে না। সঠিক নীতি-সহায়তার অভাবে লোকসান গুনছে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারি সহায়তা পেলে শতভাগ মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় যুক্ত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)।

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি: প্রয়োজনীয়তা ও চর্চা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই।

ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায়। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, গবেষণা পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক ও পরিচালক ড. বজলুল এইচ খন্দকার।

বাংলাদেশের উন্নয়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তকীকরণের ভূমিকা শীর্ষক প্রবন্ধে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক অন্তভূক্তিকরণ কতটা জরুরি তা আমরা করোনায় উপলব্ধি করেছি। প্রধানমন্ত্রী ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা দিতে চেয়ে তা পুরোপুরি পারেননি আর্থিক অন্তর্ভূক্তি না থাকার কারণে। সরকারি তথ্যভাণ্ডারের দুর্বলতার কারণে মানুষকে এ সেবার মধ্যে আনা যায়নি।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বিস্তার ঘটলেও তাতে নীতি সহায়তার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিকাশের মাধ্যমে এখন টাকা পাঠানো, কেনাকাটা, হাসপাতালের বিল, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ সরকারি সব পরিসেবার বিল ও বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আনতে পারছি। তবে বিকাশের মতো আর কেউ পারছে না। নগদ কিছুটা করলেও এখনও তাকে লাইসেন্স দেওয়া যায়নি। মানুষ বিশ্বাসহীনতায় ভুগছে। সরকারের নীতি সহায়তা নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমও শুরু করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিকাশ সিটি ব্যাংকের সহায়তায় ক্ষুদ্র ঋণ চালু করেছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষুদ্র সংস্থাগুলোর উচ্চহারের ঋণ থেকে বের হয়ে আসতে পারবে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার ব্যক্তিখাতে বিপুল পরিমাণ অর্থছাড় করে। এসব অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে দিলে বহু লোক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মধ্যে আসতেন। এতে এক দিকে যেমন স্বচ্ছতা আসতো, অন্যদিকে সব মানুষের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছাত।

“সামাজিক সুরক্ষা ও ব্যক্তি পর্যায়ে সরকারের অর্থ বিতরণের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণ” শীর্ষক প্রবন্ধে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার বাজেটের মাধ্যমে ২৮ হাজার কোটি টাকা সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় করে। এ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে বিতরণ হলে আর্থিক অন্তর্ভূক্তি বাড়বে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা সবখাতেই গর্ব করার মতো সফলতা পেয়েছি। তবে বৈষম্য বেড়েছে। মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে তা কমানো সম্ভব।

ইআইইউ গ্লোবাল মাইক্রোস্কো ফিন্যান্স রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী, সামগ্রিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে ৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ৪৪ তম বলে আরেকটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেন ড. বজলুল এইচ খন্দকার।

তিনি বলেন, এখন, আমাদের যুব সমাজ প্রযুক্তি ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে চায় তাই সরকারের উচিত এই বিষয়ে আর্থিক কৌশল নির্ধারণ করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণত আইনের আলোকে কাজ করেন। নতুন করে ইনোভেশন খুব কম হয়। তবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সহজতর করা হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিং ও ব্যাংকের উপশাখা বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে পিছিয়ে থাকার পেছনে আমাদের দেশের মানুষের মেন্টালিটিও একটি কারণ। আমাদের মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় করেন। অনেক দেশে এই হার ২৮ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে।

সারাবাংলা/জিএস/একেএম

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর