ঘুষ নিয়ে ভোটের ফল পাল্টানোর অভিযোগ প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে
২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:২১
রাজবাড়ী: রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টাকা নিয়ে ভোটের ফল পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের মিন্টু।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ধুলদীজয়পুর গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি।
আব্দুল কাদের মিন্টু বলেন, ‘ধুলদীজয়পুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও রাজবাড়ীর ডা. আবুল হোসেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সরদার আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মান্নান খাঁ (ফুটবল প্রতীক) এর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রাতে মান্নান খাঁয়ের কর্মী মো. ইউনুছ গায়েনের বাড়িতে রাত্রিযাপন করেছিলেন। আমার আশঙ্কা সেখান থেকে তিনি টাকা গ্রহণ করে ফল পাল্টে দিয়ে আমাকে মাত্র সাত ভোটের ব্যবধানে পরাজয় দেখিয়েছেন। আমার এজেন্ট একাধিকবার তাকে পুনরায় ভোট গণনার কথা বললেও তিনি হুমকি দেন।’
আব্দুল কাদের মিন্টু বলেন, ‘বিপুল কর্মী-সমর্থক থাকার পরও বড় ধরনের সংঘাত পরিহারের জন্য আমি সবাইকে নিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে ফিরে আসি। আজ গণমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরলাম এবং পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদনও জানিয়েছি। এতে যদি কোনো ফল না মেলে তাহলে পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে আইনগতভাবে যা যা করণীয় তাই করব।’
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদের মিন্টুর পোলিং এজেন্ট জাহাঙ্গীর প্রামানিক বলেন, ‘আমি শুরু থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত কেন্দ্রের মধ্যে ছিলাম। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে ব্যালট বাক্সগুলো নেওয়া হয়। সেখানে ভোট গণনার সময় প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান আমাদেরকে দূরে রাখেন। আমাদেরকে না দেখিয়ে তারা ভোট গণনা করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মান্নান খাঁ কে বিজয়ী ঘোষণা করে চলে যান। এসময় আমরা পুনরায় ভোট গণনার দাবি করলেও তিনি সেটি করেননি। বরং উল্টো আমাদেরকে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দিয়েছেন।’
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী আমি সারারাত ভোট কেন্দ্রের স্কুলেই ছিলাম। আমি কোনো প্রার্থী বা কোন এজেন্টের কাছ থেকে টাকা পয়সা গ্রহণ করিনি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগকারীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মাদ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ভোটগ্রহণ এবং গণনার বিষয়ে প্রত্যেক প্রিজাইডিং অফিসারকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া ছিল। প্রতিটি কেন্দ্রেই সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে ভোটগ্রহণ এবং গণনা করা হয়েছে। এরপরেও যদি কোনো প্রার্থীর অভিযোগ থাকে তাহলে তিনি নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ বা মামলা করতে পারেন।’
সারাবাংলা/একে