স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত— সংলাপে অংশ নেবে না বিএনপি
২৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:১১
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপকে ‘অর্থহীন’ বলে অভিহিত করে এতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএনপি মনে করে— বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ সময়ের অপচয়। এর আগের দুইটি নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপে অংশ নিয়ে মতামত দিয়েছিল। বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে সব উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপি বলছে, রাষ্ট্রযন্ত্রের বেআইনি ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারণে নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পর পর দু’টি নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
২০১২ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান বলবৎ করে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র বিকাশের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটি বলছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। বিএনপি বিশ্বাস করে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই আয়োজন করতে পারবে না।
রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিএনপি বলছে, রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তার কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সে কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিতবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর