৭৫ পরবর্তীতে সাম্প্রদায়িকতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: নৌ প্রতিমন্ত্রী
৩১ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:৪৬
ঢাকা: পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতির ওপর সাম্প্রদায়িকতা চাপিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় সংস্কৃতি চর্চাও বাধাগ্রস্ত হয়েছিল বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিশ্বভরা প্রাণ’ এর নিজেদের চুতর্থ বর্ষপূর্তিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আমাদের ওপর হামলা বারবার আঘাত করেছে। যেই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে আমরা পরাজিত করেছিলাম। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। এটি আমাদের মীমাংসিত একটি বিষয় ছিল। এই মীমাংসা করতে আমাদের ৩০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। আমাদের লাখ লাখ মা- বোন তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। কিন্তু এ মীমাংসিত বিষয়টি নিয়ে আবার লড়াই করতে হচ্ছে আমদের। কারণ মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি যিনি আমাদের জাতিসত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর আমাদের ওপর যে জিনিসটি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। মীমাংসিত বিষয়টিকে আবার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় এটি ধীরে ধীরে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা সংস্কৃতি সবক্ষেত্রে। সে জায়গাটায় আমরা সবাই লড়াই করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের কারণে একাত্তরে মীমাংসিত বিষয়গুলো আবার আমাদের ওপর চেপে বসেছে। তারা ধীরে ধীরে অনেক শক্তিশালী হয়েছে। কারণ তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল।’
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে আমরা কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং সংস্কৃতিকে সাহসের সঙ্গে উচ্চারণ করতে পারি। বীরত্বগাঁথা রচনা করা বীর মুক্তিযোদ্ধারাও পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে নিজেদের পরিচয় দেওয়ার একটি ভীতিকর পরিবেশের মধ্যে ছিল। আজকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা গর্ব করে বলতে পারে আমি মুক্তিযোদ্ধা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় সম্মানে সম্মানিত হচ্ছেন। রাষ্ট্র তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। যেটা পঁচাত্তর পরবর্তীতে ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘যে জাতি তার নিজের সৃষ্টির ইতিহাসকে ভুলে যায়, সে জাতি অন্ধকারে তলিয়ে যায়। সে রকম একটি অন্ধকারে আমরা তলিয়ে যাচ্ছিলাম। সংস্কৃতি চর্চাও বাধাগ্রস্ত ছিল। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল চর্চাগুলো বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। বর্তমানে সরকার সংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বরাদ্দ বাড়িয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বে তুলে ধরেছেন।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন খ্যাতিমান আবৃতি ও অভিনয় শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। সংগঠনের আন্তর্জাতিক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা কবি ইমরোজ সোহেল চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শওকত আলী, সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, আবৃতি শিল্পী অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী, নাট্যজন টুটুল চৌধুরী, সংগঠনের সভাপতি জাহান বশির, সাধারণ সম্পাদক নিপা মোনালিসা।
পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সারাবাংলা/একে
৭৫ পরবর্তী সাম্প্রদায়িকতা জাতির পিতা নৌ-প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান