Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক: এমএসএফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২২ ০০:০২

ঢাকা: দেশে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২১ সময়কালে বিরাজমান সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল লক্ষণীয়ভাবে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২১: এমএসএফ’র পর্যবেক্ষণ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)-এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এমএসএফ নির্বাহী প্রধান অ্যাডভোকেট মো. সাইদুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন এমএসএফ সমন্বয়কারী মোহাম্মদ টিপু সুলতান ও এমএসএফ কর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

মূল প্রবন্ধে বলা হয়— বৈশ্বিক মহামারি করোনায় বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ঘোষণা ও দ্রুত টিকা প্রদানের মাধ্যমে করোনার ঝুঁকি কমাতে সক্ষম হলেও এ সময়ে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন এবং দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়া মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে যার ফলে সমাজে বৈষম্য বেড়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে— ২০২১ সময়কালে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার সর্বপরি মানবাধিকারের ক্ষেত্রে কার্যত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, এমএসএফ মনে করে কয়েকটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি উদ্বেগজনক ছিল। এগুলো হলো— নারী নির্যাতন, সড়ক দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য দুর্ঘটনা, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও নির্বাচনী সহিংসতা। মানবাধিকার সংস্কৃতি শুধু সরকারের নয় এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক আচরণেরও বিষয়। সড়ক দুর্ঘটয়া যেমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল তেমনি, আমরা নিজেরাও আইন না মেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছি। যেখানে ১০০ যাত্রী ওঠার কথা সেখানে তিনশতম যাত্রী হয়ে আমরা আইন ভঙ্গ করে উঠে যাই। এখানে দুর্নীতি আছে, আমাদের সচেতনতার অভাব আছে। যাদের আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা তাদের দায় বেশি। তাদেরই উচিৎ জবাবদিহিতা করা যেহেতু তারা আমাদের করের টাকায় নিয়োগ পেয়েছেন। স্বীকার করা মানেই দায় নেওয়া নয়। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যারা তাদের শাস্তিও ভোগ করা উচিৎ।

বিজ্ঞাপন

নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতারোধে দেশে যথেষ্ট কঠোর আইন থাকা সত্বেও অপরাধ দমনে ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভুমিকা দেখা যাচ্ছে না। এসময় পারিবারিক সহিংসতা ও বাল্যবিয়ের সংখ্যাও উদ্বেগজনক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সুলতানা কামাল।

তিনি বলেন, ‘বাল্যবিয়ের শিকার শিশু বা কিশোর জীবনে বেড়ে ওঠারই সুযোগ পাচ্ছে না যা তার সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এ ছাড়াও বিয়ের পর শিক্ষা বঞ্চিত হওয়া, শারীরিক ও যৌন নিপীড়নসহ নানা নির্যাতন ঘটে তার ওপর।’

এমএসএফ’র তথ্যানুসন্ধান এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মোতাবেক ২০২১ সালে গুমের অভিযোগ কিছুটা কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ার, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে দেশের সীমান্তগুলোতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এ বছরের চিত্র ছিল উদ্বেগজনক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন চিন্তা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মতামত প্রকাশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করার মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনাসমূহ এই সময়ে কমে নাই বরং অধিক সংখ্যায় ঘটেছে যা ছিল ২০২১ সালের অন্যতম একটি উদ্বেগের বিষয়। ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত হত্যা, যৌন হয়রানি, নির্যাতন, আত্মহত্যা ও হত্যার ঘটনার সংখ্যা অতীতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

বিভিন্ন পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দমনে পুলিশ অযাচিতভাবে বল প্রয়োগ করেছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অনিরাপদ ও ঝুকিপূর্ণ কর্মপরিবেশের কারণে বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় শ্রমিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে গণপিটুনির মতো ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার চিত্র: বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা যেমন; ধর্ষণ, গণ-ধর্ষণ, ধর্ষণ ও হত্যা ও পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বিগত সময়ের তুলনায় চলতি বছরে উদ্বেগজনকভাবে ঘটেছে। এ সময় ৬৯২টি নারী ও ৯৪৫টি শিশু ও কিশোরী যৌন নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৩৯৬টি, গণধর্ষনের শিকার হয়েছেন ১০৭ জন নারী, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন ১১ জন নারী, ধর্ষনের পর আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন নারী, ধষর্ণের চেষ্টা করা হয়েছে ৮২ জন ও যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন ৮২ জন নারী। এ ছাড়াও প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১ জন। অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ জন নারী।

অপরদিকে ২০২১ সালে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনে ৩৩০ জন, ৮২ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ ৫৭৮ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছেন। আত্মহত্যা করেছেন ৪২৩ জন নারী। অপহরণ করা হয়েছে ৫ জন নারীকে, নিখোঁজ রয়েছেন ২৩ জন নারী। নারী প্রতি সহিংসতার শিকারে রয়েছেন ১৪ জন প্রতিবন্ধী নারী। গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতিশোধ, পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, প্রেমঘটিত জটিলতা ইত্যাদি কারণে এ হত্যাকান্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে।

উল্লেখ্য যে ৯৪৫টি শিশু ও কিশোরী যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ৪৭৯ জন শিশু ও কিশোরী ধর্ষণ, ১১২ জন গণধর্ষন শিকার হয়েছেন। ধর্ষণ ও হত্যার করা হয়েছে ২৫ জন শিশুকে, ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন শিশু কিশোরী, ৭৮ জন প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন ১১১ জন শিশু কিশোরী ও ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন ১৩৭ জন শিশু কিশোরী।

অপরদিকে ২০২১ সালে শিশুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনায় শারীরিক নির্যাতনে ১০৬ জন, ২৪ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ ১৯৫ জন শিশু কিশোরী হত্যার শিকার হয়েছেন। আত্মহত্যা করেছেন ২৩৬ জন শিশু । অপহরণ করা হয়েছে ৩৮ জন শিশুকে, নিখোঁজ রয়েছেন ৫৫ জন শিশু। শিশুদের প্রতি সহিংসতার শিকারে রয়েছেন ১২ জন প্রতিবন্ধী শিশুও।

২০২১ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৩৫ জন জীবিত ও ৫৮ জন মৃত, মোট ৯৩ জন নবজাতক শিশুকে পাওয়া গেছে যা অমানবিক ও নিন্দনীয়।

সংখ্যালঘু নির্যাতন: বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী সারা বছর ধরেই সংখ্যালঘু নির্যাতন, উপাসনায় ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা অব্যহত ছিল। এ সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৫ জন, ১৩৮টি ঘরবাড়িতে আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগ কর হয়েছে, উপাসনায় ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ১২০টি, ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ৪টি হিন্দু পরিবারের উপর হামলা হয়েছে। সারা বছরে নিহত হয়েছে ৯ জন ও আহত হয়েছে ২৪৯ জন।

২০২১ সালে অক্টোবর মাসে সবচাইতে উদ্বেগজনক যে ঘটনা ঘটেছে তা হলো সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব দুর্গাপূজা পালনকালে তাদের উপর সুপরিকল্পিত নিরবচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। হিন্দু সম্প্রদায়ের সার্বজনীন দুর্গোৎসব চলাকালে কুমিল্লার পরিস্থিতি এবং তার জের ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদী ও সুবিধাভোগী গোষ্ঠী দেশের ১৯টি জেলার বিভিন্ন পুজামন্ডপ ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতা ঘটিয়েছে।

অপরদিকে পুলিশ-হামলাকারীদের মধ্যেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী অক্টোবর, ২০২১ মাসে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ৫৩টি ঘটনা ঘটেছে, ৪১টি ঘরবাড়ি ও বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে। ১৩ থেকে ২০ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ৯ জন নিহত ও কমপক্ষে দুইশতাধিক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতরা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬জন মুসলমান ও ৩জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। হামলা চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

১৫ মার্চ, ২০২১ তারিখ সোমবার মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা শহরে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। নোয়াগাঁও এর হিন্দু সম্প্রদায়ের ঝুমন দাস ফেসবুকে হেফাজত নেতাকে নিয়ে একটি পোস্ট দিলে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার রাতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের এলাকাবাসীরা ঝুমন দাসকে আটক করে পুলিশে দেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়— তার বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবে এবং সেটি প্রক্রিয়াধীন অথচ বুধবার সকালে আশপাশের চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের কাছাকাছি যান। সেখান থেকে শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে হিন্দুদের গ্রামে হামলা চালিয়ে তাঁদের অন্তত ৯০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ঘরের ভেতরে থাকা প্রতিমা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঘরের টাকাপয়সা নিয়ে যায়। ঘটনার পর প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলেও পুলিশ কাউকে আটক করেনি।

এমএসএফ’র সুপারিশ

০১. এমএসএফ মনে করে, এখন পর্যন্ত কোন সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার শেষ না হওয়া, হামলা প্রতিরোধ, হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ তাঁদের পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা, জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, দোষারোপের রাজনীতি এবং প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত না করে ঢালাওভাবে গ্রেফতার দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার প্রক্রিয়া জটিল করা অগ্রহণযোগ্য ও সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ সকল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

০২. বিক্ষোভকারীদের দমনে ও সহিংস কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে পূর্ব থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিক্ষোভকারীদের দমনে ও সহিংস কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ না করে দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করলে হতাহতের ঘটনা বহুগুণে এড়ানো যেতো বলে এমএসএফ মনে করে।

০৩. এমএসএফ মনে করে, দেশে শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি, নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলো যে হারে ঘটেছে তাতে করে সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব বিশেষ করে সমাজে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রনে সরকারের ভূমিকা আরও জোরদার করতে হবে।

০৪. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, এদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও তথ্য পাওয়ার অধিকারের ক্ষেত্রে নিরন্তর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরোধী এবং অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে।

০৫. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা ও নির্বাচনী সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং এর পুনরাবৃত্তিরোধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণের জোরালো দাবি জানাচ্ছে।

০৬.কারাভ্যন্তরে বন্দি নির্যাতনের ঘটনা অবশ্যই অনাকাঙ্খিত তেমনি কারাভ্যন্তরে মাদক সামগ্রি পাওয়া অপ্রত্যাশিত। ঘটনার সুষ্ঠূ তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি করা হচ্ছে।

০৭. কারাগারসমূহের অভ্যন্তরে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাসমূহের যথাযথ তদন্ত করেও তার পূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত করা উচিত বলে এমএসএফ মনে করে।

০৮. দেশের নাগরিকদের সমঅধিকার ও সমমর্যাদা রক্ষায় একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে সরকার উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা সে অনুযায়ী সরকারের উচিত মানবাধিকারের একটি সর্বজনগ্রাহ্য মান বজায় রাখা। সকলের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ও সমঅধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে মানবাধিকার সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য সরকার ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত প্রয়াস জরুরী বলে এমএসএফ মনে করে। সর্বোপরি মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা করছি।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

এমএসএফ মানবাধিকার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২ দিনে আয় ২৮৯ কোটি টাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩২

মৌসুমী হামিদের সংসার যেমন চলছে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

সম্পর্কিত খবর