Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাতে নতুন বই, চোখেমুখে উচ্ছ্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৪২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সমবেত একদল শিক্ষার্থী, সবার হাতে নতুন বই। চোখেমুখে তাদের অন্যরকম উচ্ছ্বাস। নতুন বইগুলো বুকে জড়িয়ে রেখেছেন কেউ, আবার কেউ বারবার মলাট উল্টে দেখছেন। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ঋত্বিকা বিশ্বাস বলেন, ‘নতুন বই পেয়ে খুব ভালো লাগছে। ভালো করে পড়ব, ভালো রেজাল্ট করব।’

শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্কুলের সামনে শিক্ষার্থীদের নতুন বই হাতে নিয়ে এমন আনন্দ, উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে উৎসবের আয়োজন না হলেও নতুন বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের কোনো কমতি ছিল না। বিভিন্ন স্কুলে নতুন বই নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যান তাদের অভিভাবকরাও।

বিজ্ঞাপন

সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম নগরীর স্কুলে-স্কুলেও বছরের প্রথমদিনে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ভিড় এড়াতে ধাপে ধাপে প্রতিটি স্কুলে বই বিতরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম জেলায় এবার প্রায় দেড় কোটি বই পাবে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে অর্ধেক ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। ধাপে ধাপে দেওয়ার কারণে সব বই একসঙ্গে আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যে বাকি বই চলে আসবে।

শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিকের সব বই চট্টগ্রামে এসেছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের বইগুলো পৌঁছার পর বিতরণ শুরু হবে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তাদের স্কুলগুলোতে উৎসব সহকারে বই বিতরণের ব্যবস্থা করে। নগরীর টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে বই বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এরপর স্কুলে-স্কুলে বই বিতরণ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘এক সময় একটি বই হাত বদলের মাধ্যমে কয়েক বছর ধরে পড়া হতো। এখন পুরনো, ছেঁড়া বই কেউ পড়ে না। শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথমদিন নতুন বই পাবার এ সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর নতুন বছরের প্রথমদিনেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাচ্ছেন।’

শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘শুধু পাঠ্যবই নয়, নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল ও বাস্তবমুখী পড়ালেখায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বই পড়ার আসক্তি তৈরি করতে পারলে ছেলেমেয়েরা আর বিপথে যাবে না।’

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বই বিতরণ উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর নিছার আহমেদ চৌধুরী, সচিব খালিদ মাহমুদ, প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, আবদুল মান্নান, নুরুল আমিন, বেগম লুৎফন্নেসা দোভাষ বেবী, হুরে আরা বিউটি, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ জারেকা বেগম, কুসুমকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চম্পা মজুমদার এবং কাট্টলী সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম।

এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর দারুল উলুম কামিল মাদরাসায় বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। মাদরাসায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সারাদেশে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে বই উৎসব না হলেও প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞান নির্ভর একটি আধুনিক বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে বহুমূখী প্রচেষ্টা, বিনামূল্যে বই বিতরণ তার মধ্যে একটি অনন্য সফল কার্যক্রম। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের সিঁড়ি হিসেবে শিক্ষাকেই বেছে নিয়েছেন।’

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুহসিন ভূঁইয়া, মুহাদ্দিস আনোয়ার হোসেন, আরবি বিভাগের প্রভাষক খালেদ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, শিক্ষক প্রতিনিধি মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ফারুকী, ইবতেদায়ী প্রধান হোসাইন মুহাম্মদ ইউসুফ, হারুনুর রশীদ, ছাত্র প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/একেএম

নতুন বই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর