Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বর্ণবাদবিরোধী নায়কের আড়ম্বরহীন বিদায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১ জানুয়ারি ২০২২ ২০:২১

দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নায়ক ডেসমন্ড টুটুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১ জানুয়ারি) ক্যাপটাউনের অ্যাংলিকান ক্যাথেড্রালে শেষ দিনের মতো শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আর্চবিশপের ইচ্ছা ছিল তার শেষকৃত্য যেন খুব সাদামাটাভাবে হয়। মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছিলেন, বাজারের সবচেয়ে সস্তা কফিনে যেন তার মরদেহ বহন করা হয়। তার ইচ্ছা অনুযায়ী একটি সস্তা কফিনে শান্তিতে নোবেলজয়ীকে বহন করে চার্চে নিয়ে আসা হয়।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শেষ দিনের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শুরু হয়। এদিন সকাল থেকে সেন্ট জর্জের বাইরে ছিল অবিরাম বৃষ্টি। এরিমধ্যে শোকার্তদের স্তোত্র এবং শোকগীতি চলে।

সকালে টুটুর কফিন চার্চে আনার সময় সঙ্গে ছিলেন বড় মেয়ে থাকডেকাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। টুটুর ইচ্ছা অনুযায়ী কফিনের উপরে রাখা হয়েছিল সাদা একগুচ্ছ ফুল।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আগতরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। টুটুকে শেষবিদায় দিতে মানুষের উপস্থিতি ১০০-তে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। এর আগে শুক্রবারও ক্যাথেড্রালের বাইরে সারিবদ্ধ হয়ে শত শত মানুষ টুটুকে শ্রদ্ধা জানান।

শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা শ্রদ্ধা নিবেদনে করতে গিয়ে টুটুকে ‘নতুন জাতির আধ্যাত্মিক পিতা হিসেবে’ বর্ণনা করেন।

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর (রোববার) নোবেল বিজয়ী আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। সোমবার থেকেই এক সপ্তাহের শোক পালন শুরু হয়। শনিবার টুটুর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নববর্ষের দিনে কেপটাউনের সেন্ট জর্জ ক্যাথেড্রালে সম্পন্ন হয়।

ডেসমন্ড টুটুর জন্ম ১৯৩১ সালের ৭ অক্টোবর, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লের্কড্রপে। ১৯৬২-৬৬ পর্যন্ত লন্ডনের কিংস কলেজে ধর্মতত্ত্বের উপর পড়ালেখা করেন টুটু। সেখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে আসেন। ধর্মতত্ত্ব পড়াতে আফ্রিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। এরপর ধীরে ধীরে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন টুটু। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য, জাতিগত বিবাদ এবং শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু সরকারী নীতির অবসান ঘটাতে তার অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন ডেসমন্ড টুটু।

১৯৮০-এর দশকে ডেসমন্ড টুটু সেন্ট জর্জকে বর্ণবাদী শাসকবাহিনীর দমন-পীড়নে ভোক্তভুগী কর্মীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত করেন। ডেসমন্ড টুটু এলজিবিটি অধিকার, শিক্ষার সমান সুযোগসহ বিভিন্ন সমঅধিকার আন্দোলনের পক্ষে আজীবন লড়ে গেছেন।

কেপ টাউনের গির্জার কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, লন্ডনের অ্যাবে এবং বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে টুটুর জন্য একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/আইই

আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর