Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফাইভ-জি’র যুগে বাংলাদেশ, আইসিটিতে নানা অ্যাওয়ার্ড অর্জন

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৩৯

ঢাকা: দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পালক। গেল বছর দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন পালক হিসাবে যুক্ত হয়েছে পঞ্চম প্রজন্মের মুঠোফোন সেবা ফাইভ-জি প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে দেশের টেলিযোগযোগ খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। গেল বছর দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অলিম্পিকখ্যাত বিশ্ব সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি’র ২৫তম আসর। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অংশ নেয়।

বছরটিতে উইটসা এবং অ্যাসোসিওর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এমিনেন্ট পার্সনস অ্যাওয়ার্ড’ ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অ্যাসোসিও লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২১’-এ ভূষিত করা হয়। এছাড়া এ বছর এপিকটা অ্যাওয়ার্ডস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দুটি শ্রেণিতে বিজয়ী এবং দুটি মেরিট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তথ্য প্রযুক্তি খাতে গেল বছরের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল মূলত এগুলোই।

ফাইভ-জির যুগে বাংলাদেশ

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০২১ সাল অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বছরটিতে পঞ্চম প্রজন্মের মুঠোফোন সেবা ফাইভ-জি’র যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। টেলিটক গ্রাহকরা দেশের ছয়টি এলাকায় প্রাথমিকভাবে এই সেবা উপভোগ করতে পারছেন। ১২ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে ফাইভ-জি সেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সময় ভিডিওবার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রাথমিকভাবে মোবাইল অপারেটর টেলিটক ফাইভ-জি চালু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, বাংলাদেশ সচিবালয়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং ঢাকার বাইরে সাভার ও টুঙ্গিপাড়া— এই ছয়টি এলাকা আপাতত ফাইভ-জি কাভারেজের আওতায় এসেছে। পরবর্তী সময়ে টেলিটক ঢাকা শহরের ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ প্রযুক্তি সেবা চালু করবে। এছাড়া নতুন বছরের মার্চে তরঙ্গ বরাদ্দের নিলামের পর বেসরকারি তিন মোবাইল অপারেটর ফাইভ-জি সেবা দেবে। ২০২২ সালের পর টেলিটক ও বিটিসিএলের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল, বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনোমিক জোনগুলোতে এই সেবা চালুর প্রস্তুতি চলছে। এদিকে দেশের বেশিরভাগ এলাকা এখন ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। বেশিরভাগ অপারেটরই তাদের নেটওয়ার্ক ফোর-জি’র আওতায় নিয়ে এসেছে।

আন্তর্জাতিক আইসিটি সম্মেলনে পুরস্কারে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী ও জয়

গেল বছর দেশে প্রথমাবরের মতো চারদিনের আন্তর্জাতিক আইসিটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অলিম্পিকখ্যাত বিশ্ব সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি’র ২৫তম আসর নভেম্বরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করে। ৭৫টিরও বেশি দেশের শতাধিক প্রযুক্তিবিদের অংশগ্রহণে আইসিটির অলিম্পিকখ্যাত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি ২০২১ (ডব্লিউসিআইটি)’ বাংলাদেশ সফলভাবে সম্পন্ন করে। ওই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বের ৬৭ টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বৈঠক (বিটুবি সেশন) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে ওইসব দেশে ব্যবসার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

সম্মেলনে উইটসা এবং অ্যাসোসিওর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এতে ‘এমিনেন্ট পার্সনস অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা এ পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া ‘অ্যাসোসিও লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এ বছর বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার সার্ভিসেস, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), ইনফো-সরকার প্রকল্প, বইঘর এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অ্যাসোসিও পুরস্কার অর্জন করেছে। এছাড়া ভিন্ন তিন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ আরও তিনটি উইটসা পুরস্কার অর্জন করেছে। ‘সাসটেইনেবল গ্রোথ/সার্কুলার ইকোনমি’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ, ‘ইনোভেশন ই-হেলথ সলিউশন’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন-১৬২৬৩ এবং ‘ই-এডুকেশন অ্যান্ড লার্নিং’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিয়ানমার, হংকং, নেপাল, তাইওয়ান, গ্রিস, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে।

এপিকটা অ্যাওয়ার্ড

গেল বছর বাংলাদেশ দুই ক্যাটাগরিতে চারটি এপিকটা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। দুটি বিজয়ী এবং দুটি মেরিট অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা। পাবলিক সেক্টর ও ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ক্যাটাগরি থেকে বিজয়ী হয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ক্যাটাগরি থেকে বিজয়ী হয়েছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি)। এছাড়াও টারশিয়ারি স্টুডেন্ট ক্যাটাগরি থেকে মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) এবং সিনিয়র স্টুডেন্ট ক্যাটাগরি থেকে মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নেতৃত্বে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (এপিকটা) অ্যাওয়ার্ডস প্রতিযোগিতায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রথমবারের মতো অংশ নেয় বাংলাদেশ। করোনার কারণে এ বছর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে কয়েকটি ধাপে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রসঙ্গত, বেসিস ২০১৭ সালে এপিকটা অ্যাওয়ার্ডস বাংলাদেশে আয়োজন করে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

আইসিটি আওয়্যার্ড টপ নিউজ ফাইভ-জি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর