Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেরোবিতে অনশন প্রত্যাহার, বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পেলেন ডিন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩ জানুয়ারি ২০২২ ১২:২৯

রংপুর: বিভাগীয় প্রধানের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে আমরণ অনশনে যাওয়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিত করেছে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শরিফুল ইসলামকে বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাত ১১টার দিকে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে বিকেল ৪টা থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আমরণ অনশনের প্রেক্ষিতে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সংকটকালীন সময়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন উক্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এ আদেশ ৩ জানুয়ারি ২০২২ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

তবে বিভাগীয় প্রধান জনী পারভীনকে অপসারণ করা হলো কি না এবিষয়ে কোন নির্দেশনা উল্লেখ নেই সেই অফিস আদেশে। এনিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

তবে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনী পারভীন উপাচার্যের কাছে ছুটির আবেদন করেছেন বলে জানতে পেরেছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শরিফুল ইসলামকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।’

এর আগে, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর থেকে বিভাগীয় প্রধান অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন অর্থনীতি বিভাগের ৮ শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

অনশনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অর্থনীতি বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সেশনজটমুক্ত ও আইকিউএসি রেটিংয়ে প্রথম স্থানপ্রাপ্ত বিভাগ ছিল। কিন্তু বিভাগের বর্তমান জনি পারভীন বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পর থেকে তার লাগাতার অনুপস্থিতি ও অসহযোগিতার কারণে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সেশনজটে পড়েছে। করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ অনলাইনে ক্লাস চালু করলেও তিনি দেড় বছরেরও বেশি সময় বিভাগে কোনো সভা আহ্বান করেননি। বর্তমান বিভাগীয় প্রধানকে অপসারণ করার জন্য দীর্ঘ এক মাস থেকে আন্দোলনের পর উপাচার্যের পক্ষ থেকে বিষয়টি অতিদ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও কোন সুরাহা না করায় আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তারা।

তবে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনি পারভীন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমিই শিক্ষকদের হ্যারেজমেন্টের শিকার। তারাই রেজাল্ট আটকে রেখেছিলেন। ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর জন্য একাধিকবার মিটিং ডাকলেও শিক্ষকরা আসেননি। বিভিন্ন সময় শিক্ষকরাই খারাপ আচরণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবগত করেছি।’

বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় অনশন কর্মসূচি পালন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘জনি পারভীনকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণ ও শাস্তির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন থেকে আগেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি উপাচার্যের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। আগামী সিন্ডিকেট সভায় জনী পারভীনকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যাহতি এবং শাস্তির আওতায় আনা না হয় তাহলে আবারও আমরণ অনশনে যাবে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।’

উল্লেখ্য, আমরণ অনশনের নেতৃত্বে বিভাগের ৬ শিক্ষক হলেন— অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম, শাফিউল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, বেলাল উদ্দীন এবং প্রভাষক কাজী নেওয়াজ মোস্তফা।

সারাবাংলা/একে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর