বরিশাল সিটি মেয়রকে ৭ কাউন্সিলের আইনি নোটিশ
৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:৩১
বরিশাল: দায়িত্বশীল পদে থেকে বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা ও বৈষম্যমূলক আচরণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ তিন জনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সাত জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে নোটিশে।
রোববার (২ জানুয়ারি) বিকেলে আইনজীবীর মাধ্যমে ডাক রেজিস্ট্রিযোগে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিসিসি মেয়র ছাড়াও সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সচিবকেও নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশদাতা সাত কাউন্সিলর হলেন— ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৌহিদুল ইসলাম, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদ আহমেদ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়াউর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ডের আমির হোসেন বিশ্বাস, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের এনামুল হক।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) নোটিশের তথ্য জানিয়ে আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, নোটিশগ্রহীতাদের নোটিশ গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। জবাব না পেলে বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার রাজিব জানান, আইনি নোটিশের বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। তবে এরকম কিছু হলে আইনিভাবেই মোকাবিলা করার কথা বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সিইও সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, নোটিশের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। নোটিশ পেলে বলতে পারব, কী বিষয়ে নোটিশ করা হয়েছে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকারের বিভাগীয় পরিচালক, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক, জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক এবং জনতা ব্যাংক লিমিটেড বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক বরাবর নোটিশের অনুলিপি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নোটিশদাতা সাত কাউন্সিলরের সিটি করপোরেশন থেকে মাসিক সম্মানি ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তারা ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা পাচ্ছেন। কিন্তু অন্য কাউন্সিলরদের ৫০ হাজার টাকা করেই মাসিক সম্মানি দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হোল্ডিং ট্যাক্স এক হাজার শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে নোটিশদাতাদের জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, সিটি করপোরেশনের স্থায়ী বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বেআইনিভাবে ওএসডি করে রেখে মাস্টার রোলে অদক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে সিটি করপোরেশন চালানো হচ্ছে। মাস্টার রোলের কর্মচারীদের কোনো আইনি দায়বদ্ধতা না থাকায় তাদের কারণে জনগণের ক্ষতি হতে পারে।
নোটিশে বলা হয়, সরকারি আদেশ-নির্দেশ অনুযায়ী সিটি করপোরেশন পরিচালনার নিয়ম থাকলেও তা মেয়রসহ নোটিশ পাওয়া তিন জন খামখেয়ালি করে কাজ চালাচ্ছেন। এতে করপোরেশনে স্থবিরতা ও জন-অসন্তোষ বাড়ছে। একইভাবে হাটবাজার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় না দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ইজারা দেওয়া হয়েছে বেআইনিভাবে। ফলে ইজারাদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণ।
সারাবাংলা/টিআর