Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহুরী সেচ প্রকল্প: কমছে ব্যয়, বাড়ছে মেয়াদ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ জানুয়ারি ২০২২ ১০:২০

ঢাকা: ব্যয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি মেয়াদ বেড়েছে মহুরী সেচ প্রকল্পে। এক্ষেত্রে মূল ব্যয়ের তুলনায় বাজেট কমছে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়ছে এক বছর। এজন্য ‘ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (ফর মহুরী ইরিগেশন প্রজেক্ট) নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

এদিকে গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে ২৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশ। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৪৫৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮০ কোটি টাকা। এখন তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা কমিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে  ৫৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা মিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের  ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে  এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।

সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক ঋণে মোট ৪৫৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুলাই হতে ২০১৯ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৪ সালের ১৭ জুন একনেকে অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় মোট ৪৬৭ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধিসহ মোট ৫৮০ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়।

বিজ্ঞাপন

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, বর্তমানে সমগ্র বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর প্রভাব, প্রকল্প এলাকায় বাস্তব অবস্থা, বৈদ্যুতিক সরবরাহ লাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি আরইবির গাইড লাইন পরিবর্তন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন মেয়াদ একবছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৯টি প্যাকেজ কাজের মধ্যে ইতোমধ্যে ৫টি প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে বাস্তব প্রয়োজনীয়তার জন্য ৪টি প্যাকেজের কাজের পরিমাণ ও ব্যয় কমেছে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বৃহদাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিস্কাশন ও সেচ প্রকল্পগুলোর জন্য উন্নতর ব্যবস্থাপনা প্রণয়নের উদ্দেশ্য একটি সমীক্ষা প্রকল্প ২০০৯ সালের নভেম্বর হতে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাস্তবায়িত হয়। মহুরী সেচ প্রকল্পের জন্য স্পেশালাইজড ম্যানেজমেন্ট ইফনিট (এসএমইউ) সম্বলিত একটি উন্নত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালে এডিবির অর্থায়নে প্রকল্প এলাকায় আরো একটি সমীক্ষা প্রকল্প নেয়া হয়। এই সমীক্ষা প্রকল্পের সুপারিশের ভিত্তিতে মহুরীসেচ প্রকল্পে বেদ্যুতিক পাম্পের সহায্যে প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থায় ভূ-গর্ভস্থ পাইপ লাইনের মাধ্যমে খাল থেকে সেচের পানি সরবরাহ পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে মহুরী সেচ প্রকল্প আধুনিকায়ন এবং গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জিকে) ও তিস্তা সেচ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাইয়ের জন্য প্রকল্পটি নেয়া হয়।

প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনীর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) একটি সাবষ্টেশন ও ২১০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক সরবরাহ লাইন নির্মাণ কাজের সংস্থান রয়েছে কিন্তু মাঠের বাস্তব অবস্থার জন্য পাম্পগুলো বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য সরবরাহ লাইন নির্মাণ দৈর্ঘ্য ৭৩ কিলোমিটার বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড পল্লী বিদ্যুত সমিতির নির্মাণ গাইডলাইন পরিবর্তনের কারণে কয়েকটি স্কীমে, পাম্পে সোলার বিদ্যুৎ সংযোগ ও প্রয়োজনীয় নতুন আইটেম অন্তভুক্ত করা হয়। এতে ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৪ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু কোভিড-১৯ এর প্রভাবের কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। ফলে নির্ধারিত মেয়াদে সম্পূর্ণ কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না তাই প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রকল্পের অনুকুলে এডিবি ১৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্থায়নের নেগোসিয়েটিভ চুক্তিতে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।

প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত ফার্মার ক্যানেল সিস্টেম কাজের ৩টি প্যাকেজের বাস্তবায়ন বর্তমানে চলমান রয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত এই প্যাকেজগুলো উদ্ভুত ভ্যারিয়েশন কাজের জন্য কন্টিনজেন্সি খাত হতে সম্ভাব্য ব্যয় সংস্থান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মহুরী সেচ প্রকল্পের আধুনিকায়নসহ সুবিধাভোগীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তথা জনগণের জীবনমান উন্নয়ন
ও দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব হবে।

সারাবাংলা/জেজে/এসএসএ

মহুরী সেচ প্রকল্প

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর