Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ১৩ দিন ধরে স্বামী-সন্তানের অপেক্ষায় খাদিজা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:০৯

নিখোঁজ আরিফুর রহমান ও তার মেয়ে কুলসুম

বরগুনা: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ১৩ দিন পার হলেও সন্ধান মেলেনি বরগুনার বেতাগীর আরিফুর রহমান ও তার ৪ বছরের মেয়ে কুলসুমের। আরিফের স্ত্রী ও স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অভাবের সংসারে দারিদ্রতা যেন লাগামহীন ঘোড়া। জোটেনি কোনো সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা।

নিখোঁজ আরিফুর রহমান (৩৮) বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল লতিফ মৃধার ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে আরিফ সবার বড়। দুর্ঘটনার পর তার স্ত্রী এবং স্বজনরা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চসহ ঝালকাঠি ও বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে এবং বরিশালের শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি।

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে মেজো মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে অভিযান-১০ লঞ্চে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন আরিফ। স্ত্রী খাদিজা বেগম এবং ছোট দুই সন্তানকে রেখে ঢাকায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার প্রতি ২৫ হাজার টাকা সহায়তা করা হলেও আহত ও নিখোঁজদের পরিবারকে কোনো সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়নি।

নিখোঁজ আরিফের মা আলেয়া জাহান বলেন, আমার ছেলে সংসারের একমাত্র উপাজন সক্ষম ব্যক্তি ছিল। আমার ছেলের দুই সন্তান নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় আছি। কিভাবে ওরা বড় হবে? ওদের ভবিষ্যত কি? আমার ছেলে ও নাতনির নিখোঁজের পর এখন আমাদের সংসারে অভাব দৃশ্যমান। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের দায়িত্ব চাপে আমারে বড় ছেলে আরিফের ওপর। সে না থাকায় আমারদের পরিবার এখন ছন্নছাড়া। পরিবারের সবাই এখন দুদর্শাগ্রস্ত। চোখের পানি ঝরানোই আমার সান্ত্বনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ছেলে ও নাতনীর পরিচয় সনাক্তে আমরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছি। তবে এখনও আমরা তাদের জীবিত ফেরত পাওয়ার আশায় আছি।

আরিফের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার পথে দুর্ঘটনার দিন লঞ্চ উঠে রাত ৯টায় আমার সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয়। সকালে বাড়ি না ফেরায় তাদের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। ঘটনার পর থেকে আমাদের আত্মীয় স্বজনরা ঝালকাঠির ঘটনাস্থলসহ বরগুনা ও বরিশালে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু আমার স্বামী ও সন্তানের কোনো খোঁজ পাইনি। এখন বাড়িতে বসে তাদের ফিরে পাবার আশায় দিন কাটে আমার। আমার বড় মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলেটা ছোট। কিভাবে সামনে দিন গুলো চলবো সেই চিন্তায় দিশেহারা। ওদের ভবিষ্যত, লেখাপড়া, খাবার, জামার কাপড়ের খরচসহ নানা চিন্তায় এখন আমার বাঁচার ইচ্ছা হয় না।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, লঞ্চে অগ্নি দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে নিখোঁজ যাত্রীদের সরকারি সহায়তা এখনও আসেনি। সহায়তা আসলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেবো।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠি সদরের দিয়াকুল গ্রামের কাছে সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটিতে আগুন লেগে যাএই হতহতের ঘটনা ঘটে। এতে বেতাগীতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরিফসহ এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।

সারাবাংলা/এসএসএ

টপ নিউজ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর