চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের লালদীঘি এলাকায় ‘কোর্ট হিল’ বা ‘পরীর পাহাড়ে’ থাকা আদালত এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়সহ সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, পরীর পাহাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য। শুধু পরীর পাহাড় নয়, দেশের সব জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাটে সমন্বিত সরকারি অফিস স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। ওই পাহাড়ে থাকা আইনজীবীদের ভবন নিয়ে জেলা প্রশাসন এবং আইনজীবী সমিতির বিরোধের মধ্যে সচিবের এই বক্তব্য এলো।
সেই পাহাড় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কে এম আলী আজম বলেন, ‘পরীর পাহাড় একটি ঐতিহ্যবাহী পাহাড়। এ পাহাড় বহুকালের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তাই এটি সংরক্ষণ করতে হবে। এ পাহাড়কে সংরক্ষণের জন্যই মূলত আমাদের এই সমন্বিত দফতর।’ সমন্বিত সরকারি দফতর হলে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি কার্যালয় তৈরির চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণে লালদিঘী এলাকায় সেই পাহাড়ের মূল প্রবেশপথ। সেই পাহাড়ে আদালত সংলগ্ন এলাকায় জেলা আইনজীবী সমিতি সম্প্রতি আইনজীবীদের চেম্বারের জন্য নতুন দু’টি ভবন নির্মাণেরর উদ্যোগ নিলে আপত্তি তোলে জেলা প্রশাসন। সমিতির ওই দুই নতুন স্থাপনা নির্মাণকে জেলা প্রশাসন বলছে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। আর সমিতির দাবি, নিয়ম মেনে ‘অনুমোদন’ নিয়েই তারা ভবন করছেন। ইতোমধ্যে পাহাড়ে নতুন স্থাপনা নির্মাণ না করতে এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তাতে সায় দেন প্রধানমন্ত্রী।
এ অবস্থায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পাহাড়টিকে ‘পরীর পাহাড়’ হিসেবে উল্লেখ করে সেটি সংরক্ষণের জন্য সকল স্থাপনা উচ্ছেদে অনড় অবস্থানের কথা জানায়। আইনজীবী সমিতি জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। বিবাদ গড়ায় আদালতেও। গত বছরের ৭ নভেম্বর আদালতে প্রতিনিধিত্বমূলক একটি মামলা দায়ের করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন। মামলায় জেলা প্রশাসককে বিবাদী করে বলা হয়, বর্তমান জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামে যোগদানের আগে সব সরকারি নথিতে পাহাড়টিকে ‘কোর্ট হিল’ হিসেবে উল্লেখ করা হত। কিন্তু সম্প্রতি সেটা পরিবর্তন করে পরীর পাহাড় লেখা হচ্ছে। পরীর পাহাড় নামকে বেআইনি ঘোষণা করে এই নাম ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে প্রতিনিধিত্বমূলক মামলাটি করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির বক্তব্য, আদালত পাহাড়টিকে ‘পরীর পাহাড়’ হিসেবে উল্লেখ না করতে আদালত অর্ন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।