পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত
৬ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:১৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: নির্বাচনে হেরে বিজয়ী প্রার্থীর বাড়িতে হামলার সময় বাধা দেওয়ায় পুলিশের উপর হামলা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় অন্তত ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশের উপর হামলার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবাবগঞ্জ সার্কেল) আতিউর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় হোসেনডাঙ্গা গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে পুলিশ সদস্য ছাড়া আর কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পর পরাজিত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনি ও আব্দুল কুদ্দুস সেরাতাল পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৫ জানুয়ারি) ভোটে ঝিলিম ইউনিয়নের ০৮ নং ওয়ার্ডে টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৫৯ ভোট পেয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন শরিয়ত আলী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোরগ প্রতীকে ৫৪৫ ভোট পেয়েছেন মনিরুল ইসলাম মনি। এছাড়াও তালা প্রতীকে আব্দুল কুদ্দুস সেরাতাল ৫১৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়াও আনারুল ইসলাম আপেল প্রতীকে ৩০০ ভোট, আনু বাক্কার ফুটবল প্রতীকে ২৪০ ভোট ও সাদিকুল ইসলাম ফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন ৪১ ভোট।
নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনি ও আব্দুল কুদ্দুস সেরাতাল এবং তাদের লোকজন বিজয়ী প্রার্থীর বাড়িতে হামলা করার পরিকল্পনা করে। শতাধিক লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বিজয়ী প্রার্থী শরিয়তের বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। শরিয়তের বাড়িতে যাওয়ার আগেই হোসেনডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা করে তারা।
নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য শরীয়ত আলী জানান, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আমার বাড়িতে হামলার পরিস্থিতি জানতে পেরে জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ উপস্থিত হয়। এসময় তারা পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশের একটি মোটরসাইকেল ভেঙে ফেলেছে তারা। পুলিশের উপর হামলায় অন্তত ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. সায়েদা সুলতানা জানান, তিন জন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বিভিন্ন পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ। বাকি হামলাকারীদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ৬৬ জন, ইউপি সদস্য পদে ৫৪৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য পদে ১৭৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মোট ভোটার ২ লাখ ৬৭ হাজার ৪৩৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৪১ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৪ জন। ১৪ ইউনিয়নের মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৪টি।
সারাবাংলা/এমও