ইসি গঠনে আইন প্রণয়নসহ ১৪ প্রস্তাব গণফ্রন্টের
৬ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৫১
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নতুন আইন প্রণয়নসহ ১৪ দফা প্রস্তাব দিয়েছে গণফ্রন্ট। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তিন জন নারীসহ ৯ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে এসব প্রস্তাব দিয়েছে গণফ্রন্ট। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে গণফ্রন্টের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে এই সংলাপে অংশ নেয়।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ব্রিফিংয়ে বলেন, নির্বাচনে যেন সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকে, নির্বাচনি আইনে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা রাখার প্রস্তাব দেন গণফ্রন্টের নেতারা। তারা বলেন, নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। স্বাধীনতার পর সংসদে যেসব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেসব দলের সমন্বয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করেন তারা।
বঙ্গভবনে তাদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা অপরিহার্য। জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে সুস্থ রাজনীতি অপরিহার্য। রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালনায় সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে, যেন রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব জানান, রাষ্ট্রপতি এখন পর্যন্ত ১১ দিনে ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন। গত ২০ ডিসেম্বর এই সংলাপ শুরু হয় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আলোচনার মাধ্যমে। পরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সংলাপে মোট আমন্ত্রিত দল ছিল ২০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) সংলাপে অংশ নেয়নি।
প্রেস সচিব জানান, আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত আরও আটটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে রাষ্ট্রপতির সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী ৯ জানুয়ারি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে আলোচনা হবে সন্ধ্যা ৬টায়, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় আলোচনা হবে। পরদিন ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় পার্টি (জেপি) এবং সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জেএসডি) আমন্ত্রণ জানানো আছে।
এছাড়া ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় ইসলামী ফন্ট বাংলাদেশ ও ৭টায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) এবং ১২ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় বিএনপি ও সন্ধ্যা ৬টায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য বিএনপি সংলাপ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে সিইসি ও অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন ইসি গঠন করবেন। আর এর অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর