Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফেলানী হত্যাকাণ্ড: ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচারের আশা

জাহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৭ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৩৮

কুড়িগ্রাম: ভারতের সীমান্তে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পায়নি পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। এ সময় মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে মারা যায় ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারে।

বিজ্ঞাপন

পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় ওই বিশেষ আদালত।

ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে ফের নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।

এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা এবং মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকের কাছে গিয়েছেন তারা। কিন্তু, ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পেলেন না।

বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই দুই বার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ননা দিয়েছেন। তারপরও ন্যায় বিচার পাননি। তবে, ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা ছাড়েননি।

ফেলানী হত্যা মামলায় পরিবারকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এস এম আব্রাহাম লিংকন। তিনি জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রমন এবং বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অথচ সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিবাদীকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু, পরবর্তীতে আর শুনানি হয়নি। বর্তমানে কার্য তালিকা থেকে বাদ পড়েছে রিটটি। করোনার কারণে রিটটির সর্বশেষ অবস্থা জানেন না তিনি।

বিজ্ঞাপন

অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ন্যায় বিচারের আশা ব্যক্ত করে বলেন, জেনারেল সিকিউিরিটি ফোর্স কোর্টে বাদী ছিল বিএসএফ, আসামি ছিল বিএসএফ এবং বিচারকও ছিল বিএসএফ। ফলে ন্যায় বিচার পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে। রিট নিষ্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দেবেন তাতে দুই দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে মনে করছেন।

প্রসঙ্গত, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতেন। সেখানকার একটি ইট ভাটায় কাজ করতেন তিনি। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রামখানার কলোনীটারী গ্রামে মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েঠিল। তাই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি রওনা হন। ৭ জানুয়ারি ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সারাবাংলা/একেএম

ফেলানী হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর