Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশ সফরে খরচ কমছে, বাড়ছে পরামর্শক খাতে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ জানুয়ারি ২০২২ ১১:২৫

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে ব্যয় কমছে, তবে বাড়ছে পরামর্শক খাতে। এজন্য শেষ সময়ে এসে সংশোধন  হচ্ছে ‘সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প: জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি। এটির বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও রাজস্ব খাতের বিভিন্ন অঙ্গে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা কমছে। অন্যদিকে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক সেবার পরিমাণ ৮০১ জনমাস এবং ব্যয় ৩৩ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে মোট ৫ হাজার ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ১০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, জাতীয় মহাসড়কের (এন-৪) জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত বিদ্যমান ৭০ কিলোমিটার সড়ককে দুই লেন হতে চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে ধীরগতির যান (এসএমভিটি) চলাচলের জন্য লেন নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় আধুনিকায়ন করা হবে। হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট (এইচডিএম) সার্কেলের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উন্নয়নের জন্য পরামর্শক সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা মিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের  ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ উন্নতকরণের মাধ্যমে ট্রান্সপোর্ট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য জয়দেবপুর হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার সড়ক দুই লেন হতে চার লেনে উন্নীত করার জন্য মোট ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল একনেকে মূল ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুমোদিত হয়। ভূমি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত অর্থের সংস্থানের জন্য মোট ৩ হাজার ৬৬ কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ সালের মার্চে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।  এই সংশোধনী ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অনুমোদন করেন। পরবর্তীতে প্রকল্পটির বিশেষ সংশোধিত ডিপিপি ২০১৬ সালের ২২ মার্চ সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় মোট ৩ হাজার ৩৬৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০১৮ সালের মার্চে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের পরিমাণ, ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধি ও বাস্তবায়ন মেয়াদকাল বৃদ্ধিসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলনের কারণে মোট ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি ১৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের মে মাসে একনেকে দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। এতেও কাজ শেষ হয়নি। ফলে মোট ৬ হাজার ২১৪ কোটি ৪১ লাখ ২২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পের আবারও বিশেষ সংশোধন করেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালের ১৯ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে এর মধ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এছাড়া গত বছরের ৬ জুনে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্পেশাল ড্রইং রাইটসের (এসডিআর) বিপরীতে ডলারের মূল্যমান পরিবর্তন হওয়ায় এবং চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ কাজের জন্য প্রতিশ্রুত পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ না পাওয়ায় ফাইন্যানন্সিং গ্যাপ পূরণের জন্য সরকারি খাত হতে অর্থের সমন্বয়, নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত, বিভিন্ন অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধির জন্য মোট ৬ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের এপ্রিল হতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত তৃতীয় সংশোধীত ডিপিপি পাঠানো হয়।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, স্পেশাল ড্রইং রাইটসের বিপরীতে ডলারের মূল্যমান পরিবর্তন হওয়ায় এবং চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ কাজের জন্য প্রতিশ্রুত পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ না পাওয়ায় ফাইন্যান্সিং গ্যাপ পূরণের জন্য সরকারি খাত হতে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার সমন্বয় করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধিতে প্রাইস এডজাস্টমেন্ট খাতে ১৯৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি। ভ্যাট, আইটি, সিডি খাতে মোট ১৪৫ কোটি ৩২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধি। নতুন অঙ্গ হিসাবে বৈদ্যুতিক লাইট স্থাপন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তসহ এ খাতে প্রাক্কলন ব্যয় ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। আরএইচডি হেড কোয়ার্টার নির্মাণ খাতে ২০ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ১৩৩ কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, পুনর্বাসন খাতে ১৪১ কোটি ৯৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, আরএইচডি ইকুইপমেন্ট খাতে ৭ কোটি ৬৬ হাজার টাকা, ইউটিলিটি খাতে ১১২ কোটি ৬৬ হাজার টাকা, ফিজিক্যাল কনটিনজেন্সি খাতে ১০ কোটি টাকা, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও রাজস্ব খাতে বিভিন্ন অঙ্গে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হ্রাস পেয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটি উভয়পার্শ্বে এসএমভিটি লেনসহ ছয় লেনে উন্নীতকরণ করা হলে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহার করে ভবিষ্যতে বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত ও নেপাল এবং বুড়িমারী দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সড়ক সংযোগ সহজতর হবে। একইসঙ্গে জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। তাই প্রকল্পটি তৃতীয় সংশোধনের জন্য অনুমোদনযোগ্য।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারির কারণে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ সম্ভব হয়নি। তাই এ খাতে ব্যয় কমানোর প্রস্তাব করা হয়। অন্যদিকে পরামর্শক খাতের ব্যয় বাড়ছে। তাদের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

পরিকল্পনা কমিশন বিদেশ সফর

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর