ফারমার্স ব্যাংকের বাবুল চিশতীসহ ৪ জন রিমান্ডে
১০ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:১৭ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ২০:১৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক ও নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীকে (বাবুল চিশতী) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। এছাড়া অন্য তিন আসামি বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) জিয়াউদ্দীন আহমেদ এবং বকশীগঞ্জ শাখার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফভিপি) মাসুদুর রহমান খান এর বিরুদ্ধে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহানগর হাকিম গোলাম নবী দুদকের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম। আদালত বাবুল চিশতীকে পাচঁদিনের এবং বাকি তিনজনকে চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ওই চারজনকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের আগে উল্লিখিত চারজনসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে রাজধানী গুলশান থানায় দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম বাদী হয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অন্য দুই আসামি হলেন বাবুল চিশতীর স্ত্রী রোজী চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখার সাবেক সাবেক ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফারমার্স ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা মনে করছেন, ফারমার্স ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আসামিদের গ্রেফতার করা হলে বিষয়টি বের হয়ে আসবে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক ও অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশকতী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নিজ নামে, তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের নামে এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ফারমার্স ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ২৫টি হিসাব খোলেন। পরবর্তীতে হিসাবগুলোর মাধ্যমে ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের সহায়তায় বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকের হিসাব থেকে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা স্থানান্তর করেন।
এ টাকা দিয়ে আবার কখনো নিজেদের নামে ক্রয়কৃত ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। যা সন্দেহজনক লেনদেন এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মামলায় বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল ১৬০ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া চারজনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোয় চিঠি দেয় দুদক।
দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞায় থাকা অভিযুক্তরা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), তার স্ত্রী রোজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, মাজেদুল হক চিশতী, মেয়ে রিমি চিশতী, রাশেদুল হক চিশতীর স্ত্রী ফারহানা আহমেদ, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি অ্যান্ড সিইও একেএম শামীম, ডিএমডি আব্দুল মোতালেব পাটোয়ারী, এসভিপি গাজী সালাহ্উদ্দিন, ইভিপি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, ভিপি লুৎফুল হক, ভিপি মো. মনিরুল হক, এফভিপি মো. তাফাজ্জল হোসেন, এভিপি মোহাম্মদ শামসুল হাসান ভুঁইয়া, এইও মাহবুব আহমেদ ও ইও মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
সারাবাংলা/এআই/জিএস/একে
আরও পড়ুন
ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৪ জন গ্রেফতার