বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর ১১ দফা বিধিনিষেধ
১০ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৩৯
ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মাস্ক না পরলে আইনি ব্যবস্থা এবং সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধসহ ১১ দফা বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এসব বিধিনিষেধ আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব সাইফুল ইসলামের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বাজারঘাট ও অফিস-আদালতে মাস্ক না পরলে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রার্দুভাব এবং দেশে এই রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে এসব কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হলো। পরর্বতী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন- মাস্ক না পরলে জরিমানাসহ ১১ দফা বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন জারি
করোনা সংক্রমণ রোধে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেগুলো হলো— দোকান, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। না পরলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে; ২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে; রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সনদ দেখাতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাস্ক পরার বিষয়ে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। প্রজ্ঞাপনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
গণপরিবহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে— ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেকসংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সব ধরনের যানবাহনের চালক ও সহকারীদের অবশ্যই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে। ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত তারিখের পরে ভ্যাকসিন সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
একইসঙ্গে সর্বসাধারণের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ও বুস্টার ডোজ প্রযোগ ত্বরান্বিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় প্রচার ও উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিতে বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
বন্দরগুলোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে— স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং বাড়াতে হবে। বন্দরে ক্রু-দের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতে আসা ট্রাকের সঙ্গে কেবল চালক থাকতে পারবেন, কোনো সহকারী আসতে পারবেন না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশও বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেখাতে হবে এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।
কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
সারাবাংলা/জেআর/এসবি/টিআর
১১ দফা বিধিনিষেধ করোনা সংক্রমণ বিধিনিষেধ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন