Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অ্যাপসে ছবি দিয়ে ভারতীয় মুসলিম মেয়েদের নিলামে বিক্রির চেষ্টা

রোকেয়া সরণি ডেস্ক
১০ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:৪৩

অ্যাপস তৈরির পেছনে জড়িত কয়েকজন সন্দেহভাজন আসাম থেকে আটক

তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে ভারতীয় মুসলিম মেয়েদের ছবি। ছয় মাস আগে ভারতীয় বৈমানিক হানা খান ভারতীয় মুসলিম মেয়েদের নিলাম করার জন্য ব্যবহৃত একটি অ্যাপে নিজের ছবি দেখতে পান। কিছুদিন পর ওই অ্যাপ তৈরির পেছনের ব্যক্তিদের খুঁজে বের না করেই অ্যাপটি নামিয়ে ফেলা হয়।

নতুন বছরের সূচনালগ্নে আরও একটি একই ধরনের অ্যাপ আবারও সামনে আসে। ‘বুল্লি বাই’ নামের এই অ্যাপে হানা খানের ছবি না থাকলেও মুসলিম অধিকারকর্মী, সাংবাদিক, অভিনয়শিল্পী, রাজনীতিবিদ এবং নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানি তরুণী মালা ইউসুফজাইয়ের ছবি ছিল ‘গৃহকর্মী হিসেবে বিক্রির জন্য’ হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

তথ্যপ্রযুক্তির এরকম অপব্যবহারে ভারতীয় মুসলিম নারীদের কেবল ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তা নয়, অনলাইন ও যৌন হয়রানির শিকারও হচ্ছেন তারা। আর তা নিয়েই সরব হন ভারতের নারী অধিকারকর্মীরা।

তোপের মুখে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপটি নামিয়ে ফেলা হয়। এর সঙ্গে জড়িত চার সন্দেহভাজনকে আটকও করা হয়। ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপের নির্মাতা হিসেবে ২০ বছর বয়সী যুবক নিরাজ বিষ্ণয়ীকে পূর্ব আসাম থেকে আটক করে পুলিশ।

ভারতের মুসলিম মেয়েরা সংখ্যা কম হওয়ায় এমনিতেই তারা অনলাইনে হয়রানির শিকার হন বেশি। হানা খান বলেন, ‘সুল্লি ডিলস’ অ্যাপে আমার ছবি দেখার পর আমার পুরো দুনিয়া নড়ে ওঠে। কেউ আমার সঙ্গে এমনটা করেছে ভেবে প্রচণ্ড মন খারাপ হয় আমার। কিন্তু যখন দেখি এর সঙ্গে জড়িত কেউ ধরা পড়েনি, তখন আরও বেশি রাগ লাগে আমার। শুধু হানাই নয়, ত্রিশের কোঠার হানার অনেক মেয়ে বন্ধুর ছবিই এভাবে অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদককে বোম্বে পুলিশ জানিয়েছে, ‘বুল্লি বাই’র মতো অ্যাপ আরও বড় কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, সেটি তদন্ত করছেন তারা।

‘সুল্লি ডিলস’ ও ‘বুল্লি বাই’— দু’টি অ্যাপেরই হোস্ট প্রতিষ্ঠান গিটহাব। এর একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, হয়রানি, বৈষম্য ও সহিংসতার উসকানি রয়েছে— এমন কনটেন্ট ও আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের নীতিমালা রয়েছে। নীতি লঙ্ঘন করায় আমরা তদন্তসাপেক্ষে একজন ব্যবহারকারীকে বরখাস্তও করেছি।

হানা খানের মতোই নিজের অজান্তে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপে ছবি আসা সাংবাদিক ইসমাত আরা একে ‘অনলাইন হয়রানি’ বলে অভিহিত করেছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘হিংসাত্মক ও হুমকিমূলক এই কাজ আমিসহ অন্যান্য মুসলিম নারীদের মনে ভয় ও লজ্জার অনুভূতি তৈরির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’

আরেক ভারতীয় মুসলিম নারী আরফা খানম শেরওয়ানি, যার ছবিও বিক্রির জন্য অ্যাপসে প্রদর্শন করা হয়েছে, টুইটারে লিখেছেন, ‘নিলামটি জাল হতে পারে, কিন্তু নিপীড়নটি আসল।’

সারাবাংলা/আরএফ/

বুল্লি বাই ভারতীয় মুসলিম মেয়ে সুল্লি ডিলস