Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫জির উপযোগী হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ জানুয়ারি ২০২২ ১০:৫৫

ঢাক: সম্প্রসারণ করা হচ্ছে অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক ৫জির উপযোগী করা হচ্ছে। এজন্য ‘৫জির উপযোগীকরণে বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন ও বিশ্বব্যাপী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যে বিপ্লব ও উন্নয়ন সংঘটিত হয়েছে, সেই উন্নয়নের ধারায় সামিল হতে ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরে নিজেদের জন্য জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির বিকল্প নেই। বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, তথ্য প্রবাহে প্রতিযোগিতার কারণে ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ মাধ্যম আইসিটিভিত্তিক আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধিতে একটি প্রধান অনুঘটকের ভুমিকা পালন করে। শ্রম-ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ এরই মধ্যে অনেক উৎসাহমূলক প্যাকেজ যেমন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, ডিজাইন, উদ্যোক্তা একাডেমি ইনোভেশন, ডিজাইন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রিনিউরশিপ একাডেমি (আইডিইএ), হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, বিজনেস ইনকিউবেটর এবং ফ্রিল্যান্সারদের আইডি দেওয়ার মতো বিভিন্ন উদ্য্যেগ নিয়েছে। তবে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ মাধ্যমের কানেকটিভিটি, নির্ভরযোগ্যতা, ব্যান্ডউইথ এবং ল্যাটেন্সি প্রভৃতি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিটিসিএল বাংলাদেশের পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় দেশের মোট তথ্যের প্রায় ২৭ শতাংশ বহন করে থাকে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর বিটিসিএলের বর্তমান অপটিকাল ফাইবার কেবল (ওমফসি) নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। সে কারণে এই নেটওয়ার্কের যেকোনো দুর্বলতার কারণে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে আশার কথা দেশের ৬৪টি জেলা, ৪৭২টি উপজেলা এবং ১ হাজার ২১৬টি ইউনিয়ন বর্তমানে বিটিসিএলের নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। ভৌগলিক সীমাবদ্ধতার কারণে এখনো কিছু জেলা রয়েছে যেগুলো নির্ভরযোগ্য উচ্চ গতির অপটিক্যাল লিঙ্কের পরিবর্তে স্বল্প নির্ভরযোগ্য রেডিও লিঙ্কের আওতায় রয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি জেলায় এখনো কোনো ধরনের রিডান্ডেন্ট অপটিক্যাল সংযোগ নেই যে কারণে সেসব জেলায় নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। কোনো কোনো স্থানে বিটিসিএল নেটওয়ার্কের রিডান্ডেন্সি নির্ভর করে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ, পিজিসিবির অপটিক্যাল ফাইবার কেবল (ওমফসি) লাইনের উপর। সামগ্রিকভাবে, বর্তমানে বিটিসিএলের যে বিদ্যমান রিং নেটওয়ার্কটি রয়েছে, তা সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত জাতীয় ফোর টায়ার ডাটাসেন্টারের জন্য যে উচ্চসতির ও নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক প্রয়োজন, তার সমপর্যায়ে নেই। সুতরাং একটি শক্তিশালী অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন রিং-টাইপ নেটওয়ার্কেও গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

প্রকল্পের মূলকার্যক্রম হচ্ছে, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি, মোটরযান, ব্যাকআপ রিং নেটওয়ার্কে রূপান্তরের জন্য দেশব্যাপী ১৪৬টি আন্ডারগ্রাউন্ড ওমফসি লিংক এবং ৮টি সাবমেরিন, আন্ডার রিভার ওমফসি লায়িং লিংক স্থাপন, ৩ হাজার ১৪৪ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ওএঅসি লিং এবং ৩৯ কিলোমিটার সাবমেরিন ওমফসি স্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের সর্বত্র নিরবিচ্ছিন্ন সর্বাধুনিক টেলিযোগাযোগ ও আধুনিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেওয়া এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নতকরণ এবং সম্প্রসারণ সম্ভবপর হবে।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

৫জি অপটিক্যাল ফাইবার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর