বিধিনিষেধেও চলবে চট্টগ্রাম নগর আ.লীগের ইউনিট সম্মেলন
১২ জানুয়ারি ২০২২ ২১:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পর সংক্রমণ ঠেকাতে সভা-সমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ এলেও ইউনিট সম্মেলন অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়াভাবে এসব সম্মেলন করার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ে নগর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা থেকে এই নির্দেশনা এসেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর সারাবাংলাকে বলেন, ‘১২৯টি ইউনিট আছে। এর মধ্যে ১০৬টির সম্মেলন শেষ হয়েছে। বাকি ২৩টির সম্মেলন চলমান পরিস্থিতির মধ্যেই সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাঁচলাইশ, সরাইপাড়া, বকশিরহাট ওয়ার্ডে অবশিষ্ট ইউনিটগুলোর সম্মেলনের তারিখও চূড়ান্ত হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ মেনে ঘরোয়াভাবে সম্মেলন করতে হবে।’
তিনটি ওয়ার্ডের ইউনিট সম্মেলন তত্ত্বাবধানের জন্য তিন জন সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বকশিরহাট ওয়ার্ডে দফতর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের, সরাইপাড়ায় ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম এবং পাঁচলাইশে ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী দায়িত্ব পেয়েছেন।
সূত্র জানায়, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- দক্ষিণ কাট্টলী, পাহাড়তলী এবং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের ইউনিটগুলোতে সম্মেলনের আগে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর সেখানে ইউনিট সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। সেখানে একটি করে ইউনিট বাকি আছে।
এছাড়া সম্মেলন সম্পন্ন হওয়া ইউনিটগুলো থেকে যেসব সদস্য তালিকা পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাইবাছাইয়ের পর নগর আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধানে ইউনিটগুলোতে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ফরম দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শুরু করে নগর আওয়ামী লীগ। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে ইউনিট আছে। শুরু থেকেই বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও তার অনুসারীদের সদস্য না করা এবং সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ করে আসছেন। কয়েকটি ইউনিটে পাল্টাপাল্টি সম্মেলন হয়েছে। আবার কয়েকটি গোলযোগের কারণে স্থগিত করতে হয়েছে। ইউনিটের পাশাপাশি ২৬ ডিসেম্বর থেকে ওয়ার্ড সম্মেলন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ইউনিট সম্মেলন নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড সম্মেলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিরোধ মেটাতে ১৬ জানুয়ারি নগর কমিটির শীর্ষ নেতাদের ঢাকায় ডেকে পাঠিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে সভায় আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘যেসব ইউনিটে সম্মেলন সম্পন্ন হয়নি, সেগুলোকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে করে ফেলতে হবে। কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন হানা দিয়েছে। সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে এবং জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে।’
চট্টগ্রাম নগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহে অব্যবস্থাপনা এবং ভৌতিক বিলের কারণে নাগরিক দুর্ভোগ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, দফতর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের, আইনবিষয়ক সম্পাদক শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জহুর আহমেদ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাহবুবুল হক মিয়া, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ, স্বাস্থ্য সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম