Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝড়সহ শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:২১

শিলাবৃষ্টি, ফাইল ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: তুষারের মতো হয়ে পড়েছে শিলাবৃষ্টি। সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টি ও ঝড়। শীতের সময়ের এই রাতে এমন এক বিরল ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। গতকাল বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আধা ঘণ্টাব্যাপী মুশলধারে এই শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

পৌষের এই ব্যাপক বৃষ্টি, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও আগাম মুকুল আসা আমের মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে শিলাবৃষ্টিতে। সামান্য বৃষ্টি উপকারী হলেও অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষতির কথা বলছে আম বিজ্ঞানী ও কৃষি বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গোমস্তাপুর উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক জায়গায় জলাবদ্ধতা ছাড়াও জেলায় শীত যেন আরও কামড়ে বসেছে।

এছাড়াও সদর উপজেলা, শিবগঞ্জ ও নাচোলেও হঠাৎ গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে। গতকাল বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের আকাশ সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন ছিল। দিনব্যাপী সূর্যের দেখা মিলেনি জেলাজুড়ে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টি থামেনি গেছে বলে জানা যায়।

গোমস্তাপুরের জুলকার নাইন বলেন, সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বিকেল ৪টার দিক থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যার আগে অনেক জোরে জোরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে গোমস্তাপুরের অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে গোমস্তাপুরেও শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

শিবগঞ্জের সাজিদুল হক জানান, সন্ধ্যার দিকে সেখানে বেশি জোরে বা মুষলধারে বৃষ্টি হয়নি। তবে প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে ধীরে ধীরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্যাপক পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। দিনব্যাপী মেঘলা আকাশ থাকলেও কেউ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বৃষ্টির আশঙ্কা বা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়নি। ফলে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ী রনি আলী বলেন, জীবনেও এমন শিলাবৃষ্টি দেখিনি। শিবগঞ্জের ছত্রাজিতপুর থেকে রানিহাটি বাজার পর্যন্ত এক হাঁটুভর্তি শিলাবৃষ্টি বা পাথর রাস্তার ওপরে। এমন দৃশ্য কোনোদিন দেখেনি। রাস্তার পাশের বাড়িগুলোর সামনে দেখি কোথাও মাটি দেখা যায় না। আমের আগাম জাতের কিছু মুকুল এসেছিল, তার সবকিছুই শেষ।

সরিষা, মশুরসহ ফসলের যা ক্ষতি হয়েছে তাতে কৃষকের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে জানিয়ে আলামিন জুয়েল বলেন, বৃষ্টির পানিতে ফসল তলিয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিলাবৃষ্টিতে। এই শিলাবৃষ্টির কারণে আমের গাছে আসা আগাম মুকুল ও ডগার ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও ব্যাপক ঝড়ে ঘরবাড়ি গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে অনেক জায়গায়। স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব (আম) গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, এখনো আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেনি। ফলে শিলাবৃষ্টি হলেও তেমন ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা নেই। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির পর আমগাছে ব্যাপক ছত্রাকের আক্রমণ হয়ে থাকে। এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে আমের আগাম আসা মুকুলের সবকিছু শেষ হয়েছে শিলাবৃষ্টিতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে হালকা বৃষ্টি হলে তা আমসহ বিভিন্ন ফসলের জন্য উপকারী। মশুর, সরিষা, ছোলা, গমের জন্য সামান্য বৃষ্টি আর্শিবাদ। কারণ, এ সময়ে একটু পানির প্রয়োজন হয়। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া বৃষ্টির পরদিন যদি রোদ না উঠে তাহলে সেই ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/এনএস

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঝড় শিলাবৃষ্টি

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর