এক দিনে ১২ মৃত্যু, ২ সেপ্টেম্বরের পর সংক্রমণ ছাড়াল ৩৩শ
১৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:২৯
দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১২ জন। এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর ১৬ জন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গিয়েছিলে। এরপর একদিনে এটিই করোনা সংক্রমণ নিয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু। অন্যদিকে ২১ অক্টোবর ১০ জন মারা গিয়েছিলেন করোনা সংক্রমণ নিয়ে। এরপর এই প্রথম একদিনে করোনায় মৃত্যু দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাল।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ছাড়িয়ে গেছে ৩৩শ। গত ২ সেপ্টেম্বরের পর এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হারও ছাড়িয়েছে ১২ শতাংশ। গত ৩০ আগস্টের পর এই প্রথম এই হার ১২ শতাংশ অতিক্রম করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে গত ২৪ ঘণ্টার করোনা সংক্রমণের তথ্য জানানো হয়েছে।
নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে— গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৮৫৩টি ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৫২টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬৪৪টি।
এসব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য সারাদেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ২৭ হাজার ৪৮৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আগের নমুনাসহ এদিন মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ৯২০টি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ২২১টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৩৪৪টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৩৬ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭টি।
৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ১২ জন। গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে এই প্রথম মতো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর ১৬ জন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গিয়েছিলে। এরপর একদিনে করোনা সংক্রমণ নিয়ে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যু। অন্যদিকে, গত ২১ অক্টোবর করোনা সংক্রমণ নিয়ে ১০ জন মারা গিয়েছিলেন। এরপর এই প্রথম একদিনে করোনায় মৃত্যু দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাল।
এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ২৮ হাজার ১২৩ জনের। সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃতদের মধ্যে ৬ জন নারী, ৬ জন পুরুষ। এর মধ্যে ৭ জন সরকারি ও ৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
৫১ থেকে ৭০ বছরে মৃত্যু সর্বোচ্চ
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১২ জন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন, তাদের ৮ জনেরই বয়স ৫১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী চার জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী চার জন। আরও দুই জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছর। এছাড়া ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক জন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছর বয়সী আরও এক জন মারা গেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।
দুই-তৃতীয়াংশ মৃত্যু ঢাকা বিভাগে
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১২ জন মারা গেছেন, তার দুই-তৃতীয়াংশ বা ৮ জনই ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে এক জন করে মারা গেছেন করোনা সংক্রমণ নিয়ে। এই সময়ে রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগে করোনা সংক্রমণ নিয়ে কোনো মৃত্যু নেই।
১৩২ দিন পর এক দিনে সংক্রমণ ৩ হাজার ছাড়িয়ে
দেশে আগের দিন ২ হাজার ৯১৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৯ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হলো ১৬ লাখ ৪ হাজার ৬৬৪ জনের শরীরে।
পরিসংখ্যান বলছে, এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৩৬ জনের শরীরে। এরপর থেকে গত চার মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এছাড়া, গত ৩ সেপ্টেম্বর দেশে ৩ হাজার ১৬৭ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। এরপর এই প্রথম এক দিনে করোনা সংক্রমণ ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
১৩৬ দিনে শনাক্তের হার সর্বোচ্চ
আগের দিন নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টাতে এই হার আরও বেড়ে হয়েছে ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩০ আগস্ট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ। এরপর গত ১৩৬ দিন তথা প্রায় সাড়ে চার মাসে এই প্রথম নমুনা পরীক্ষার হার ১২ শতাংশ অতিক্রম করল।
সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগীদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগের দিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ২৬৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০২ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৯৫৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সংক্রমণ বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ দশমিক ৭২ শতাংশ।
সারাবাংলা/টিআর