বাড়তির বাজারে নাভিশ্বাস
১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৬
ঢাকা: বাজারে সবজি বাদে কম বেশি সব পণ্যের দামই বাড়তির দিকে। অল্প করে হলেও প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে চালের দাম। ডিম- মাছ আর মাংসের দামও বাড়তি। যে কারণে বাজারের ব্যাগ হাতে কেনাকাটা করতে গেলেই নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা সাধারণ মানুষের।
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই বাজার নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কাপ্তানবাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাল, ডিম আর মাংসের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের শেষ নেই। দোকানিদের সঙ্গে এ নিয়ে তর্কও করছেন ক্রেতা। খুচরা বিক্রেতারা দোষ চাপাচ্ছেন পাইকারদের ঘাড়ে, পাইকাররা বলছেন চাহিদার তুলনায় জোগান কম।
বাজারে এই মুহূর্তে মোটা ও চিকন প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেশ বাড়তি। গেল একসপ্তাহে প্রতিবস্তায় চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। পোলাওয়ের চাল সহ সুগন্ধী অভিজাত চালগুলোর দাম কেজিতেই বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
ইসলামপুর চালের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, ২৫ কেজি বস্তার কাটারি নাজির ৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৭৫০ টাকা, জিরাশাইল বস্তায় ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা, মিনিকেট ২৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৭৫০ টাকা, সেদ্ধ স্বর্ণা ১৩০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৪৮০, সেদ্ধ মোটা চাল ২৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২৫০, সেদ্ধ গুটি ১০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়, সেদ্ধ বাসমতী চাল ২০০ টাকা বেড়ে বস্তাপ্রতি ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিভিন্ন উৎসব-উপলক্ষে রান্নার জন্য বিভিন্ন সুগন্ধি চালের দামও অস্বাভাবিক রকমের বেড়েছে। একসপ্তাহ আগেও সাড়ে ৪ হাজারে বিক্রি হওয়া চিনিগুঁড়া চাল আজকে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫০০ টাকায়। দোকানিরা বলছেন লকডাউনের পর বিয়েসহ বিভিন্ন উৎসব আয়োজন বেড়ে যাওয়ায় এই চালের দাম এমন অস্বাভাবিক বেড়েছে।
তবে বেশি দামে চাল কিনলেও সবজির বাজার এখন বেশ স্থিতিশীলই। বাজারে প্রতি কেজি নতুন টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০০ টাকা, লতি ৫০ টাকা, আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। প্রতি কেজি চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। দেশি আদার কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
দেশি ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। সরিষার তেল পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা লিটার। এছাড়াও খাওয়ার জন্য এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা লিটার।
ডিমের দাম এই সপ্তাহেও বেড়েছে। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালী মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা। গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস পাওয়া যাচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। এই সব পণ্যের দামই এই সপ্তাহে বেড়েছে।
এ ছাড়া মাছের বাজারেও দাম অস্বাভাবিকভাবে উঠা নামা করায় পকেট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
সারাবাংলা/টিএস/একে