সরকারি দলের নেতারা ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন: তৈমুর
১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:৫৫
নারায়ণগঞ্জ: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে প্রভাবিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা তৈমুর আলম খন্দকার।
তিনি বলেন, সরকারি দলের উচ্চ পর্যায়ের মেহমানরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা (জাহাঙ্গীর কবির নানক) এসে ডিসি-এসপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নির্বাচনের আগে তিনি এভাবে প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তিনি তো নারায়ণগঞ্জের নাগরিকও না। এটা আমি অন্যায় মনে করি। একজন সম্মানিত নেতার কাছ থেকে এটি আমরা প্রত্যাশা করি না।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) নাসিকে নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিন শহরের মিশনপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের দফতরে গিয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ও পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আওয়ামী লীগ নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তৈমুর। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হোটেল এবং সার্কিট হাউজ ও ডাকবাংলোতে বিভিন্ন জেলা থেকে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের এনে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এসব বিষয় উল্লেখ করে প্রশাসনের উদ্দেশে তৈমুর বলেন, আইন অনুযায়ী, নির্বাচনের কাজে সরকার গাড়ি ও সরকারি ডাকবাংলো ব্যবহার করার বিধান নেই। এটি আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তবু এটি লঙ্ঘন করেই সরকারি দলের উচ্চপর্যায়ের মেহমানরা আমাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উঠেপড়ে লেগেছেন। নির্বাচনের দিন যেন বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করুন। বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে যে লোকজন আনা হচ্ছে, তারা যেন নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে যায়— সে বিষয়ে নির্দেশনা জারি করুন।
নাসিক নির্বাচনে হাতি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তৈমুর। গত কয়েকদিন ধরেই তার অভিযোগ, তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি গিয়ে পুলিশি হয়রানি করছে। মোবাইল ফোনে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জের নির্বাচনি সমন্বয়ক মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ এজেন্ট দেওয়ার কাগজপত্র ও নথি গায়েব করেছে। এসব কারণে ভোটের দিন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে এর আগে দুইবার ভোট হয়েছে। দুই বারই ভোটে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এর মধ্যে একবার তৈমুর আলম খন্দকারকেও হারিয়েছিলেন তিনি। এবারও এই সিটিতে এই দু’জনই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এর মধ্যে আইভী নৌকা প্রতীক পেলেও বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় তৈমুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। শুধু তাই নয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তৈমুরকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করলেও জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী তৈমুর আলম খন্দকার। বলেন, ৫০ বছর ধরে তিনি রাজনীতি করছেন। এছাড়া বিগত দিনগুলোতে সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে মানুষ ক্ষুব্ধ। এ কারণেই ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আব্দুস সবুর সেন্টুসহ অন্যরা তৈমুরের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর