Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গোপীবাগে ৬ খুন: ৮ বছরে ১১৮ বার সময় নিয়েও দাখিল হয়নি প্রতিবেদন

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৫ জানুয়ারি ২০২২ ১২:২৬

ঢাকা: ২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর গোপীবাগের বাসায় লুৎফর রহমান ফারুকসহ ৬ জনকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত ৮ বছরেও শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এ পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য প্রায় ১১৮ বার সময় নিয়েছে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

সর্বশেষ গত ১২ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিনও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এ জন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ১৩ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। ওইদিনও দাখিল হয়নি প্রতিবেদন।

বিজ্ঞাপন

মামলা সম্পর্কে নিহত লুৎফর রহমান ফারুকের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘গত ৮ বছর হয়ে গেল এখনো মামলার তদন্তই শেষ হলো না। বিচার তো দূরের কথা এখানো কোনো মামলার  অগ্রগতি নেই। শুনেছি নতুন তদন্ত কর্মকর্তা আসে আবার চেঞ্জ হয়। এভাবেই চলছে মামলাটি। কবে নাগাদ শেষ হবে তদন্ত আর কবে বিচার কবে পাবো। বিচারের আশা করতে করতে শেষ হয়ে যাচ্ছি। হতাশ হয়ে যাচ্ছি। হতাশা ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছি না। তবু আশা ছাড়ছি না। আশা করি একদিন ন্যায় বিচার পাবো।’

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। এখনো খুনের আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা খুন করেছে তা জানা যায়নি। আমাদের কাছে মামলাটি আসার আগে থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ তদন্ত করেছে। ঘটনা ঘটার পর পর জোরালো তদন্ত করলে রহস্য উদঘাটন করে এতদিন মামলার বিচারও শেষ হয়ে যেতে পারত। কিছু বিলম্বের কারণে মামলাটির তদন্ত শেষ করতে দেরি হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সম্ভব মামলার তদন্ত শেষ হবে।’

বিজ্ঞাপন

মামলাটির এজাহার থেকে জানা যায়, নিহত লুৎফর রহমান ফারুক পীর ছিলেন। এ কারণে তার অনেক মুরিদ ছিলেন, যারা তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। তিনি নিজেকে সবার কাছে ইমাম মাহদীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে দাবি করতেন। যার কারণে আগেও রাজধানীর বিবির বাগিচায় লুৎফর রহমানের ওপর হামলা চালানো হয় এবং গেন্ডারিয়া ও গোপীবাগে হামলার চেষ্টা করা হয়।

২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর মাগরিবের নামাজের আগে ১০/১২ জন লোক ধর্মীয় বিষয়ে জানার জন্য এসেছে বলে জানায়। লুৎফর রহমান ফারুক সবাইকে দরবার ঘরে বসতে দিয়ে তাদের খাবারের ব্যবস্থার জন্য মুরিদ শাহিনকে বাজারে পাঠায়। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে লুৎফর রহমান ফারুক, তার বড় ছেলে সরোয়ার ইসলাম ফারুক, তার মুরিদ শাহিন, মজিবুর, মঞ্জুরুল আলম, রাসেল ভূইয়া-সবাইকে মুখে স্কটেপ দিয়ে মুখ আটকিয়ে, হাত-পা বেঁধে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

ওই ঘটনায় পীর লুৎফর রহমান ফারুকের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক ওয়ারী থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

জানা যায়, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, হাদিসুর রহমান সাগর, জুলফিকার বিন সাদ ওরফে আবু ওয়াক্কাস, মামুনুর রশীদ রিপন, সৈয়দ জিয়াউল ইসলাম ওরফে জিতু ওরফে নিরব ওরফে নিয়ন ওরফে হিমু, সৈয়দ আল আমিন, তরিকুল ইসলাম, আবু রায়হান ওরফে মাহমুদ ওরফে আ. হাদী, মো. আজমির অমিত ও মো. গোলাম সরোয়ার, জাহাঙ্গীর হোসেন।
বর্তমানে আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।

সারাবাংলা/এআই/একে

৬ খুন গোপীবাগ মাওলানা ফারুক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর