চালক, হেলপার, যাত্রী— মাস্ক নেই কারও মুখে
১৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:৫১
ঢাকা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই বিধিনিষেধের আওতায় যাত্রীবাহী বাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু চালক, হেলপার এমনকি যাত্রীদের অধিকাংশেরই মুখে মাস্কের দেখা মেলেনি।
শনিবার ( ১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস্যভবন ও জতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানকালে এই চিত্রই দেখা গিয়েছে।
শাহবাগে দেখা গেল, বিহঙ্গ পরিবহন, ঢাকা নগর পরিবহন, বিআরটিসি বাস, এয়ারপোর্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পরিবহন, গাবতলী এক্সপ্রেস কোম্পানি, মালঞ্চ, বিকল্প অটো সার্ভিস, টি থ্রি পরিবহন, স্বাধীন এক্সপ্রেসসহ অধিকাংশ বাসের চালক ও হেলপারের মুখে মাস্ক নেই। সঙ্গে অসচেতন যাত্রীদের মুখেও নেই মাস্ক।
বিহঙ্গ পরিবহনের চালক মো. নাদের। আপনার মুখে কেন মাস্ক নেই জানতে চাইলে তার উত্তর— সকাল থেকে এতক্ষণ ছিল। গাড়ি চালাতে চালাতে হাঁপিয়ে উঠতে হয়। তার মাত্রই মাস্ক খুললাম।
ওই চালক দাবি করেন, তারা সচেতন। কিন্তু যাত্রীদের মুখে মাস্ক পরতে বলার পরও যাত্রীরা কথা শুনছেন না।
বাসটিতে অধিকাংশ যাত্রীর মুখে নেই মাস্ক এমনই একজন আশিক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তিনি যাবেন মিরপুর। কেন মাস্ক পরেননি এমন প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে গেলেন আর বললেন, ‘করোনার যার হওয়ার তার এমনিতেই হবে। এতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে আর কী হবে?’
ঢাকা নগর পরিবহনের চালকের মুখেই নেই মাস্ক। শাহবাগে চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি নাম বলতে চাননি। তবে নিজের ভুল স্বীকার করে সঙ্গে সঙ্গেই মাস্ক পরেন। এমন ভুল আর করবেন না বলেও জানান। তবে হেলপারের মুখে মাস্ক থাকলেও সেটি ছিল থুতনিতে।
এয়ারপোর্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ বাসের চালক রবিউল। তার মুখে মাস্ক নেই। কিন্তু কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘মাত্র পান খেলাম। তাই মাস্ক খুলছি।’
আপনার মুখে তো পান নেই। এই প্রশ্ন করতেই বলেন, ‘এখন তো মাস্ক পরলাম! আমরা যাত্রীদেরও মাস্ক দিচ্ছি ফ্রি।’
বাসের ভেতরে দেখা গেল- পুরো বাস ভর্তি যাত্রী কিন্তু হাতেগোনা কয়েকজনের মুখে মাস্ক রয়েছে। এদিকে পুরো বাসের প্রতিটি আসনে যাত্রী রয়েছে। অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। হেলপার দৌঁড়ে এসে জানালেন সবাইকে উঠার আগে জানিয়েছি, কিন্তু ভেতরে উঠে মাস্ক খুলে ফেলেন এখন আমরা কী করব?
স্বাধীন এক্সপ্রেসের হেলপার শামীম উদ্দিন। মাস্ক কই ভাই? তিনি বলেন, ‘ঘরে খাবার না থাকলে কেউ খোঁজ নেয় না কিন্তু মুখে মাস্ক না থাকলে সবাই খোঁজ নেয়।’
মালঞ্চ বাসের হেলপার এবং চালকের উভরের মুখে মাস্ক থাকলেও সেটি থুতনিতে। কিন্ত কেন এমন ভাবনা নিয়ে বাসে উঠা এরপর প্রতিবেদককেই জানালেন মাস্ক পরে বাসে উঠতে। কিন্তু প্রতিবেদকের মুখে যে মাস্ক রয়েছে সেটা তারা খেয়ালই করেননি। এরপর কথা হলে তারা জানালেন, সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মাস্ক পরা অসম্ভব। কারণ প্রতিটি চালক ও হেলপারকে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ডিউটি করতে হয়। যাত্রী ডাকতে হয়। ভাড়া আদায় করতে হয়। কীভাবে এতক্ষণ মুখে মাস্ক রাখা সম্ভব? তাই সবসময় মাস্ক পরেন না তারা।
এদিকে শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, সরকার থেকে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি সবাই না মানলে আবারও লকডাউন দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এসজে/একে