Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাইকোর্টে অব্যাহতির আবেদন প্রদীপের, সাক্ষ্য পেছাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:১৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জ্ঞাত আয়বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। উচ্চ আদালতে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে উল্লেখ করে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় পেছানোর আরজি জানান প্রদীপ। আদালত আরজি মঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় পিছিয়ে দিয়েছেন।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমদিন ছিল। আদালত একমাস সময় মঞ্জুর করে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

বিজ্ঞাপন

দুদকের কৌঁসুলি মাহমুদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আসামি প্রদীপের পক্ষে আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামি উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। হাইকোর্টে এটা শুনানির অপেক্ষমাণ আছে। এজন্য সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর আবেদন করেন আসামি। আদালত হাইকোর্টের আদেশ আনার জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে হাইকোর্টের আদেশ আনতে না পারলে ওইদিন থেকেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে যাবে।’

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুদকের মামলায় আসামি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরমধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ‘ওসি প্রদীপ’ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ করে। আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়।

বিজ্ঞাপন

তদন্তের পর গত ২৬ জুলাই দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে প্রদীপের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে সেই সম্পদ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করা হয়। এছাড়া উভয়ের বিরুদ্ধে ৪৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখের তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দুদক।

অভিযোগপত্রে চুমকি কারণের নামে নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটায় ২ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ টাকা দামের ছয়তলা বাড়ি, পাঁচলাইশ থানার পশ্চিম ষোলশহর এলাকায় এক কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকা দামের জমি এবং কক্সবাজারের ঝিলংঝা মৌজায় ১২ লাখ ৫ হাজার ১৭৫ টাকার একটি ফ্ল্যাটের বিষয় উল্লেখ আছে।

সম্পদ বিবরণীতে চুমকি কারণ নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে সম্পদ অর্জনের তথ্য দিয়েছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে মাছের ব্যবসা থেকে চুমকির আয়ের কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

অভিযুক্ত প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি কারণ সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তবে প্রদীপের সম্পদ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে ‍চুমকি পলাতক আছেন।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ কুমার দাশ। কক্সবাজারের আদালতে ওই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে ৩১ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত আছে।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

টপ নিউজ প্রদীপ কুমার দাশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর