কর্তৃপক্ষের অবহেলায় পর্যটন নগরীজুড়ে আবর্জনা
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:১৮
কক্সবাজার: শহরে সড়কের উন্নয়নের কাজের বিলম্বের কারণে যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই। তার মধ্যে রাস্তার পাশে জমে থাকা আবর্জনা নির্দিষ্ট সময়ে সরিয়ে না ফেলা এবং আর্বজনায় নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে সৃষ্ট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই অব্যবস্থাপনার জন্য কক্সবাজার পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, পর্যটন নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অব্যবস্থাপনা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা এবং অবহেলা ছাড়া কিছুই নয়। আর কোনো অযুহাত না শুনে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহরের দাবি তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের গোলদিঘির পাড়ের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশেই বিশাল আবর্জনার স্তুপ। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাই ওখানে আবর্জনা জমা করেন। এরপর সেসব ময়লা দুপুরের পর পৌরসভার ট্রাক দিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়। এতে সারাদিনই স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, হাসপাতালগামী রোগী ও তাদের স্বজন, যান চলাচলকারী এবং হাজার হাজার নানা শ্রেণি-পেশার পথচারীকে দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়।
এছাড়া বিভিন্ন সড়কে উন্নয়নের কাজের বিলম্বের কারণে শহর জুড়ে যানজট লেগেই রয়েছে। তার মধ্যে পৌরসভার আবর্জনা বহনকারী ট্রাকগুলো অন্যতম। ময়লা ভর্তি এসব ট্রাক যানজটে আটকা পড়লে পুরো সড়কে দুর্গন্ধ হয়ে যায়। এই দৃশ্য শুধু দোলদিঘির পাড়ে নয়, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এমনই আবর্জনার স্তুপ দেখা যায়।
অন্যদিকে শহরের বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, বাজার ঘাটা, পেশকার পাড়া, টেকপাড়া, চাউল বাজার, বৈদ্যঘোনা, ছয় নাম্বার, বাহারছড়া, তারাবনিয়ার ছড়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের পাশে নালাগুলো প্লাস্টিক আর আর্বজনায় ভরে গেছে। অনেক জায়গায় নালার নোংরা পানি রাস্তায় উঠে গেছে। নোংরা পানির দুর্গন্ধে সৃষ্টি হয় ভোগান্তি।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অর্নাস পড়ুয়া ছাত্রী সাইমা সোলতানা রুবি জানান, দুপুরে গোলদিঘীর পাড় হয়ে প্রাইভেটে যাওয়া সময় আর্বজনার দুর্গন্ধে বমি আসে। পৌরসভা চাইলেই দুপুরে না করে ভোরে এসব আর্বজনা অপসারণ করতে পারতো।
শহরের বৌদ্ধমন্দির সড়কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সাধারণ লোকজনের কথা আর কি বলব? খোদ পৌর কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশের বাড়ির সামনেই আবর্জনার স্তুপ। আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে নালা। অনেক সময় এসব আবর্জনা অপসারণ না করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ধোঁয়া আর আগুনে সৃষ্টি হয় নতুন ভোগান্তি এবং ঝুঁকি।
মিনহাজ চৌধুরী নামে স্থানীয় একজন জানান, পৌরসভা চাইলে এই আবর্জনাগুলো সঠিক সময়ে অপসারণ করতে পারত। নালা-নর্দমাগুলো পরিষ্কার রাখতে পারে। সড়কের উন্নয়নের কাজ চলছে বলেই কি ডবল ভোগান্তিতে পড়তে হবে? এসব অব্যবস্থাপনার বিষয়ে যখনই পৌরসভাকে বলা হয় তারা বলে, লোকজন সচেতন না। পৌর কর্তৃপক্ষের অযুহাত ভিত্তিহীন। এটি অবহেলা এবং ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নয়।
কক্সবাজার পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর (পরিচ্ছনতা পরিদর্শক) কবির হোসাইন জানান, জনগণের অসচেতনতার কারণেই শহর নোংরা হচ্ছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সকালে আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার পরেও পুনরায় লোকজন আবর্জনা ফেলে। নালায় প্লাষ্টিক আর জমে থাকা আববর্জনার বিষয়ে বলেন সড়কের উন্নয়নের কাজের কারণে নালার লাইনগুলো স্বাভাবিক নাই। যার কারণে এইটা হয়েছে।’
শহরের গোলদিঘীর পাড়ে চলাচলের রাস্তার উপর আবর্জনার স্তুপ এবং দুপুরের পরেও আবর্জনা সরানো হয় না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কাল অথবা পরের দিন ওখানে আর আবর্জনা ফেলা হবে না। মূলত শহরের আইভিপি সড়কে থাকা আর্বজনার হাউজটির সংস্কারের কাজ চলছে। যার কারণে অস্থায়ীভাবে গোলদিঘির পাড়ে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। আগামী থেকে আর ফেলা হবে না।’
সারাবাংলা/এমও
আবর্জনা আবর্জনার দুর্গন্ধ কক্সবাজার কর্তৃপক্ষের অবহেলা পর্যটন নগরী