‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেউ ভিক্ষা করবে, এটা লজ্জাজনক’
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:২৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা যত কাজই করি, এখানে সব থেকে আগে এই কাজটা করতে হবে। আমি আর দেখতে চাই না, কখনো কোনো শহীদ পরিবার জাতির পিতার চিঠি যার হাতে সে ভিক্ষা করে খাবে। সেটা যেন আর না হয়। কারণ এটা অন্তত আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক, আমি নিজে মনে করি এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে জেলাপ্রশাসক সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে দেওয়া নির্দেশনায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যেসব অঞ্চলে গণহত্যা হয়েছে, গণহত্যার শিকার সেই পরিবারদের বর্তমান অবস্থা জেনে এবং তাদের যথাযথ সম্মানজনক জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। গণকবর সংরক্ষণ এবং যেসব যুদ্ধক্ষেত্র সেগুলি চিহ্নিত করে সেগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ইতিহাসগুলি জনসম্মুখে তুলে ধরতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কেউ ভিক্ষা করবে, এটা আমাদের জন্য মোটেও সম্মানজনক না। কিছুদিন পত্রিকায় দেখার পর আমরা এখান থেকে খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসক যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। তাকে সাহায্য করেছেন। তবে এখন আমার একটা কথা, আপনাদের এটাও দেখতে হবে, কোথাও কোনো জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা শহীদ পরিবার বা গণহত্যার শিকার পরিবার কেউ এই ধরনের দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কি না? কারণ এটা অন্তত আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক বলে আমি মনে করি। জানি না অন্যে কি ভাববে। কিন্তু আমি নিজে মনে করি, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
ওমিক্রন মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান
‘যাদের অবদানে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাতির পিতা ডাক দিয়েছেন সবকিছু ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে গেছে, আর পরবর্তীতে তাদের অনেকের অনেক পরিবর্তন হয়েছে, অনেকে বিপথেও গেছে সেটাও ঠিক যেমন। তারপরও সাধারণ মানুষগুলি যারা একেবারে গ্রামের তৃণমূলের মানুষ তারা তো অন্য কিছু দেখেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করবে, তারা সেটাই করেছেন’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘কাজেই আমার অনুরোধ থাকবে, এখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীও উপস্থিত আছেন, আমরা যত কাজই করি এখানে সব থেকে আগে এই কাজটা করতে হবে। আমি আর দেখতে চাই না, কোন কখনো কোন শহীদ পরিবার জাতির পিতার চিঠি যার হাতে সে ভিক্ষা করে খাবে, সেটা যেন আর না হয়।’
সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযুদ্ধবিষক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
এছাড়া বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, জেলা প্রশাসকদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
সারাবাংলা/এনআর/এমও