Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সরকারি সেবা নিতে এসে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:২১

ঢাকা: মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকলে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে, দেশ অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, সরকারি সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়; সে বিষয়ে সকলকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটানা ক্ষমতায় থাকায় অনেক উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু, লক্ষ্য আরও অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া। এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ায় দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। কারণ, বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়তে হবে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের কারণে বাধার সম্মুখীন হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন পরপর দুই বছর করতে না পারার ব্যাপারটি উল্লেখ করেন তিনি।

জেলা প্রশাসকসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন প্রত্যেক জেলার দায়িত্ব তাদের। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য যে ব্যাপক পল্লী উন্নয়ন কাজ হাত নেওয়া হয়েছে সেগুলোকে সরকার সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে কারণ দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ করতে হলে তৃণমূলের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কথা মনে রাখতে হবে, সেই কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে অর্থ উপার্জন করে সেটা দিয়েই তো বেতন-ভাতা, সবকিছু চলে। কাজেই তাদের সম্মান করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

দক্ষ দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত এবং সেবামুখী জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, সিটিজেনস চার্টার ইত্যাদির বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে।

সুশাসন সংহতকরণের উদ্দেশ্যে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকগণ আরও আন্তরিকভাবে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কল্যাণে সকল প্রকার ভয়-ভীতির উর্ধ্বে থেকে আইনানুগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও নিজেকে জনগণের খাদেম অর্থ্যাৎ সেবক হিসাবেই ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং আমিও তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে জনগণের একজন সেবক মনে করি। ক্ষমতায় আসা, প্রধানমন্ত্রী হওয়া মানে জনগণের জন্য কাজ করার একটা সুযোগ পাওয়া এবং যে লক্ষ্য স্থির করেছি সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন।’

তাই মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বহুবিধ কাজের মাঝে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য ২৪ দফা নির্দেশনা তুলে ধরেন।

মুজিববর্ষে গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে ঘর উপহার দেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নিজেরা চিন্তা করে দেখেন, এই যে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দিলেন, একটা ঘর পাওয়ার পর মানুষের মুখের হাসি তাদের আনন্দ সেটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া জীবনে। সেটা আপনারা করতে পেরেছেন বলে আমি ধন্যবাদ জানাই।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন টেন্ডার বাক্স নিয়ে মারামারি গোলাগুলি কাটাকাটি হচ্ছে না এটাই বড় কথা। এখনও যদি কোন মন্ত্রণালয় বাকি থাকে তাদেরকে আমি বলব ই-টেন্ডার পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধি অর্থ্যাৎ সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন-পৌরসভার মেয়র সকলকে নিয়েই সমন্বিতভাবে যদি উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং প্রকল্প হাতে নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয় এবং বাস্তবায়ন যথাযথভাবে হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে নজর দেওয়া হয় তাহলে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে খুব বেশি দিন লাগবে না।

তিনি আরও বলেন, পথ দেখানো হয়েছে, পরিকল্পনাও করা হয়েছে। ডেল্টা প্ল্যানও করা হয়েছে। কাজেই সেভাবে দেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাঙালি জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলবে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই লক্ষ্য।

এই প্রত্যাশার ব্যক্ত করে জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২২ উদ্বোধন ঘোষণা করে সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই আয়োজনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি, জেলা প্রশাসকদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।

সারাবাংলা/এনআর/একেএম

ডিসি সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর