দেশীয় প্রকৌশলীদের সাফল্য, চালু হলো জিকে সেচ প্রকল্প
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৪৫
ঢাকা: দেশীয় প্রকৌশলীদের মেরামত করা পাম্প দিয়ে সচল হলো দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের রবি মৌসুম।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পাম্প হাউজে সুইচ টিপে এ মৌসুমের সেচ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম।
এর আগে, পাম্প হাউজের ৩ নম্বর পাম্পটি মেরামত করেন দেশীয় অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলীরা। অটোকনের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আলী আজাদ জানান, বিদেশি প্রকৌশলীরা মেরামত করতে প্রায় ১৭ কোটি টাকা চাইলেও তারা মাত্র ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় এই পাম্প মেরামত করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের ব্যবস্থাও সংযোজন করেছেন। এর মাধ্যমে ঢাকায় বসেও সরাসরি পাম্পগুলো কী পরিস্থিতিতে আছে, তা জানা সম্ভব হবে।
জিকে পাম্প হাইজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, হাউজের তিনটি পাম্পের মধ্যে আজ একটি চালু করা হয়েছে। ১ নম্বর পাম্পটির কিছু ত্রুটি রয়েছে। মেরামত করে দুয়েকদিনের মধ্যেই সচল করা যাবে। আর ২ নম্বর পাম্পে রয়েছে মেকানিক্যাল সমস্যা। সেটিও মেরামত করার জন্য টেন্ডার হয়েছে। একটি পাম্প দিয়ে এখন প্রতি সেকেন্ডে ৬৫০ কিউবিক ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি খালের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে যেতে আরও দুই দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, প্রকৌশলীরা একটি পাম্প সচল করায় প্রকল্পের সক্ষমতা বেড়েছে। এবার কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরার ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা দেওয়া যাবে। এতে করে বোরো ধানের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।
অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সিইও মো. নাজমুল হাসান মেহেদী বলেন, সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জিকে সেচ প্রকল্পকে ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ এবং ১৯৭৩ সালে পুনর্গঠন করেন। তাই জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এই মাহেন্দ্রক্ষণে বিদেশিদের স্থলাভিষিক্ত করে তিন নম্বর প্রধান পাম্পটি পুনরুজ্জীবিত করতে পেরে আমরা দেশীয় প্রকৌশলী হিসেবে অনেক আনন্দিত ও গর্বিত।
১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়া অঞ্চলের প্রায় ৪ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প চালু করা হয়। এর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমে কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। খালগুলো ভরাট হয়ে বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতা কমে এসেছে।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর