চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল হবে: কৃষিমন্ত্রী
১৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:০০
ঢাকা: চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেছেন, বর্তমানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে মজুদ আছে ২০ লাখ টন চাল। যা যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। আর এপ্রিলে বাজারে আসবে নতুন চাল। ফলে চালের দাম শিগগিরই স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক হবে।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন।
চালের দাম বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে চালের দাম কিছুটা অস্থিতিশীল ও ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে গমের দাম ২৩০-২৮০ ডলারের মধ্যে ছিল, তা বেড়ে এখন ৪৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে গম আমদানি হয়েছিল ৪৮ লাখ টন। আর এ অর্থবছরে জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ টন। দাম বাড়ার কারণে গম আমদানি কম হচ্ছে। ফলে আটা, ময়দার দাম চালের চেয়ে বেশি। অথচ সবসময়ই আটার দাম চালের চেয়ে কম থাকে। এছাড়া, দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। অ্যানিমেল ফিড হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজামশন বেড়েছে। তবে এই মুহূর্তে দেশে খাদ্য সংকট নেই, ভবিষ্যতেও হবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে যে ফসল কৃষকরা ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন, ঢাকায় এসে সেই ফসলের দাম ৪০-৪৫ কেজি কেন হবে? মধ্যস্বত্ত্বভোগী বা ফড়িয়া সারা পৃথিবীতেই আছে। কিন্তু এত দামের ফারাক হবে কেন? পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ অনেক অপ্রত্যাশিত খরচ আছে। একটি ট্রাক মাঠ পর্যায় থেকে ঢাকা পৌঁছা পর্যন্ত কত খরচ হয়, কোথায় কোথায় খরচ হয়, তা খুঁজে বের করতে জেলা প্রশাসক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও কৃষি মন্ত্রণালয় মিলে স্টাডি করবে। স্টাডির মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা নিরসনে জাতীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা পর্যায়ে এক হাজার ৭৬০জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসে চাল ও আটা বিক্রি শুরু হবে। চাল ৩০ টাকা কেজি ও আটা ১৮ টাকা কেজিতে দেওয়া হবে। যদিও সরকারিভাবে চালের আমদানি খরচ ৩৬-৩৭ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘চালের মজুদ সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। পঁচার মতো চাল গোডাউনে নেই। মজুদকৃত চাল মানসম্পন্ন, ফলে মানুষ খাবে।’
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওএমএস যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অবৈধ মজুতদার চিহ্নিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও জরিমানা করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম